মাইক্রোসফটের উচিত তাদের বৈশ্বিক বিষয়ক প্রধান লিসা মোনাকোকে বরখাস্ত করা, এমনই মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।মোনাকো দুইজন ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্টের প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে মাইক্রোসফটের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বা আন্তর্জাতিক বিষয় বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে নিজের রাজনৈতিক শত্রু মনে করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পরদিনই ট্রাম্প এমন মন্তব্য করলেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
এর আগে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে ট্রাম্পের সমর্থকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল। ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে বা কাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে ও কী ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এসব বিষয় সমন্বনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মোনাকো।
তার লিংকডইন প্রোফাইলে উল্লেখ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনে নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে কাজের পাশাপাশি জো বাইডেনের প্রশাসনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন মোনাকো। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মাইক্রোসফটে যোগ দেন তিনি, যেখানে কোম্পানিটির বৈশ্বিক বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে মাইক্রোসফটের সম্পর্ক বজায়ের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ ট্রাম্প বলেছেন, “মাইক্রোসফটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বড় বড় চুক্তি থাকার কারণে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় এক হুমকি মোনাকো।
“আমার মনে হয় মাইক্রোসফটের উচিৎ এখনই লিসা মোনাকোর চাকরি বাতিল করা।”
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মোনাকোর নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল হয়েছিল। নিরাপত্তা ছাড়পত্র বা সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স এমন এক অনুমতিপত্র যা না থাকলে কেউ বিশেষ ধরনের সরকারি তথ্য বা এলাকায় প্রবেশ করতে পারে না।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, ‘মোনাকোর অনেক অন্যায় কাজের’ কারণে মার্কিন সরকারও তাকে সব ধরনের ফেডারেল বা সরকারি সম্পত্তি থেকে নিষিদ্ধ করেছে।
এদিকে, ট্রাম্পের পোস্ট সম্পর্কে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি মাইক্রোসফট। এ বিষয়ে সাড়া দেননি মোনাকোও।
২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে রাশিয়ার সরকারের সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের সময় এফবিআইয়ের প্রধান ছিলেন জেমস কোমি।
বৃহস্পতিবার কোমির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, কিছু বিষয়ে ভুল তথ্য ও সরকারি তদন্তে বাধা দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ট্রাম্প বলেছেন, তার ধারণা আরও কিছু রাজনৈতিক শত্রুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমার মনে হয় এ তালিকায় আরও কেউ কেউ থাকবে।”
তবে কোনো তালিকা প্রকাশ করেননি ট্রাম্প।
জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন ট্রাম্প। যার মধ্যে রয়েছে, যেসব আইন প্রতিষ্ঠান তার পছন্দ নয় বা তার বিরুদ্ধে কাজ করে তাদের কাজে বাধা দেওয়া, সরকারের দেওয়া অর্থের মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির নীতি বা আচরণে পরিবর্তন আনতে চাপ এবং যেসব তদন্তকারীরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছিলেন তাদের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো বিষয়।
এমআর/এসএন