শেরপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পালের জামিন ইস্যুতে জেলা জজ, পিপি ও জিপির অপসারণসহ আট দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা। এতে ৩ ঘণ্টা অফিস-আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুলাইযোদ্ধা ও শহীদ পরিবার ঘোষণা দিয়েছে তাদের এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ওই একই চত্বরে অবস্থিত পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও আদালতপাড়ায় সব কাজকর্ম বেলা ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পরে দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান তাদের দাবিগুলো সরকারকে দ্রুতই জানানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক মামুনুর রহমান, শেরপুর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার মো. লিখন মিয়া, কেন্দ্রীয় যুবশক্তির সংগঠক মাহমুদুল হাসান রাকিব, সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী নূর ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী রাশেদুল হাসান দেওয়ান, জেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম, জুলাইযোদ্ধা মো. আরিফ, শহীদ মাহবুবের বড়ভাই মাজহারুল ইসলাম মাসুদ প্রমুখ।
আন্দোলনকারী ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, জামিন ইস্যুতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন পালের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৬টি মামলা হয়। পরে ভারতে পালানোর চেষ্টার সময় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর বেনাপোল চেকপোস্টে আটক হয়ে তিনি প্রায় এক বছর কারাগারে ছিলেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই ৬ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হলে শেরপুর জেলা কারাগারের গেট থেকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করে তাকে আদালতের মাধ্যমে ফের কারাগারে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে ওই বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় জামিন পান চন্দন পাল এবং কারামুক্তির পর তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
এর জেরে শেরপুর শহর বিএনপির সভাপতি ও রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানেরও সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে পিপি আব্দুল মান্নান সংবাদ সম্মেলনে করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে দুই দিনের আলটিমেটাম দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজকের অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
এমকে/টিকে