সাবেক চার শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে ১২৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে চাকরিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যারা একসময় ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্স কর্পোরেশনে (সাবেক টুইটার) কাজ করতেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি।
এই চারজন কর্মকর্তা হলেন সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরাগ আগরওয়াল, সাবেক প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেড সিগাল, সাবেক প্রধান আইন কর্মকর্তা বিজয়া গাড্ডে, সাবেক জেনারেল কাউন্সেল শন এডগেট।
সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল কোর্টে দাখিল করা নথিতে দেখা যায়, মামলাটি গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে নিষ্পত্তির শর্ত ও অর্থপ্রদান প্রক্রিয়ার বিস্তারিত কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। আদালত ১ অক্টোবর শুনানির সময় পিছিয়ে দেয় যাতে উভয় পক্ষ সমঝোতাটি সম্পূর্ণ করতে পারে।
এটি মাস্কের এক্স কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তি হওয়া দ্বিতীয় বড় মামলা। এর আগে গত আগস্টে কোম্পানিটি ৫০০ মিলিয়ন ডলারের একটি আলাদা মামলা নিষ্পত্তি করেছিল। যেখানে সাধারণ কর্মীরা দাবি করেছিলেন- তাদের গণছাঁটাইয়ের সময় প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।
২০২২ সালে মাস্ক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কিনে নেওয়ার পর কোম্পানির অর্ধেকের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেন। কর্পোরেট কাঠামো পুনর্গঠন করেন এবং নাম পরিবর্তন করে রাখেন “এক্স”। এরপর থেকেই তিনি একাধিক আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখে পড়েন।
সাবেক কর্মকর্তাদের দাবি, মাস্ক ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের অসদাচরণের মিথ্যা অভিযোগে চাকরিচ্যুত করেন। যাতে তারা চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ না পান। তারা বলেন, মাস্কের টুইটার কেনার প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম প্রকাশ করার পরই তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, প্রত্যেক কর্মকর্তা এক বছরের বেতন ও স্টক অপশনের মূল্য পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাস্ক ও তার টিম তা অস্বীকার করেন।
অন্যদিকে মাস্ক ও এক্স কর্পোরেশন দাবি করে, ওই কর্মকর্তারা দুর্বল পারফরম্যান্স ও ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার কারণে বরখাস্ত হয়েছেন। তাই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা কোম্পানির ছিল না।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষ্পত্তি মাস্কের জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। তিনি বর্তমানে এক্স প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারীর আস্থা ও বিজ্ঞাপন আয়ের ঘাটতি মোকাবেলা করছেন। তাই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে না পড়ে পুরোনো বিতর্কগুলো দ্রুত মিটিয়ে ফেলা তার জন্য লাভজনক হতে পারে।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, মাস্ক এখন তার শক্তি মূলত এক্স-এর এআই ও পেমেন্ট ফিচার সম্প্রসারণে দিতে চান। তাই কর্পোরেট বিতর্কে সময় নষ্ট না করে এগিয়ে যাওয়া তার ব্যবসায়িক কৌশলের অংশ।
এই নিষ্পত্তির মাধ্যমে ইলন মাস্ক একটি বড় আইনি চাপ থেকে মুক্তি পেলেন। তবে এক্স কর্পোরেশনের আয় ও সুনাম পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ এখনো তার সামনে সবচেয়ে বড় বাধা।
এমকে/এসএন