অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আমেরিকা ভ্রমণ করে দেশে ফিরে চুপচাপ হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় যাওয়াই তার ঠিক হয়নি। সেখান থেকে তিনি শূন্য হাতে ফিরেছেন। ওই ভ্রমণে বাংলাদেশের জনগণের দুই পয়সার উন্নয়ন হয়নি।’
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘সম্প্রতি ড. মুহম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ১০৪ জনের লাট অথবা লট বহর নিয়ে আমেরিকা ঘুরে এলেন। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে কোনো দেশের সরকারপ্রধানের ১০৪ জন লোক নিয়ে প্রায় ১০ দিন প্লেজার ট্রিপ। ওই ভ্রমণে ১০ দিন বসে ২৪ ঘণ্টা দেশ নিয়ে কেউ ভাবছেন বলে জানা নেই।
উনি যখন যান তখনই আমি আশঙ্কা করেছিলাম। উনার জায়গায় আমি হলে যেতাম না। এই মুহূর্তে দেশে থাকা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ যখন চোরাবালিতে পরে তখন যত বেশি নড়াচড়া করে তত বেশি চোরাবালিতে আটকে যায়।
যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয় তাহলে এটা উনার জন্য শেষ সময়। এই শেষ সময়ে তিনি যত বেশি কথা বলবেন তত বেশি বিপদে পড়বেন। যত বেশি ঘোরাফেরা করবেন তত বেশি জটিলতার মধ্যে পড়বেন। যত বেশি পারফর্ম করার চেষ্টা করবেন তত বেশি নিরাপদ প্রত্যাবর্তন বা সেফ এক্সিট উনার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি এখনো স্থির করতে পারছেন না।
ভাবতে পারছেন না কে তার বন্ধু।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘প্রকৃতিতে বিপদের সময় যারা ছেড়ে যায় না, তাদের বলা হয় হামীম। এরা বিপদের সময় সঙ্গী-সাথী ছেড়ে যায় না। কিন্তু ড. ইউনূসের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ সেন্টার, গ্রামীণ টেলিকম কিংবা গ্রামীণ ফোনের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার পর উনার সমক্ষ কতজন খোঁজখবর নিয়েছেন? নেননি। দেশের বাইরের নোবেল বিজয়ীরা কিংবা কোনো দেশের সরকারপ্রধান তিনি দেশে এনেছেন কিন্তু এটা কিন্তু উনার সম্পর্কের কারণে আসেনি। এই অবস্থায় আমেরিকায় যাওয়াই তার ঠিক হয়নি।’
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘আমেরিকা থেকে তিনি (ড. ইউনূস) শূন্য হাতে দেশে ফিরেছেন। সেখানে বিশ্বের বড় বড় নেতাদের সঙ্গে উনার কোনো চুক্তি হয়নি। যা বাংলাদেশের জনগণের দুই পয়সার উন্নয়ন হয়নি। যদি কোনো চুক্তি হতো তা হলে উন্নয়ন প্রপাগান্ডা শুরু হয়ে যেত। প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়ত। কিন্তু সেখানে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে যাতে সরকারের দুর্নাম হয়েছে। তিনটি রাজনৈতিক দলের ছয়জন লোক নিয়ে যাওয়া পুরো ঘটনাটা বুমেরাং হয়েছে। যারা গেছে তারাও নিজ নিজ রাজনৈতিক দলের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছে। তাদের দলীয় কর্মীরা এখন তাদের পছন্দ করছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকায় যাওয়ার পর ওই রাজনৈতিক নেতারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। কোনো মিডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিতে পারেননি। বাইরের কারো সঙ্গে তাদের আলাপ হয়নি। পেয়েছেন শুধু ডিম বৃষ্টি। সেখানে সাংবাদিক মেহেদির সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকার তার সারা জীবনের অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। গুণী সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি অসংলগ্ন কথা বলে ফেলেছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি বৈঠক করতে পারেননি। তার সঙ্গে একটি ছবি তুলেছেন, যা নিয়ে হয়ে গেছে মহা কেলেঙ্কারি, কী হাসাহাসি। সেখান থেকে দেশে ফিরে একেবারে সুনসান নীরবতা। চুপচাপ। এই নীরবতা কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়। আমেরিকা থেকে ফিরে ড. ইউনূস আশাজাগানিয়া কোনো নির্দেশনা দিতে পারছেন না। কেমন যেন একটা হতাশা নেমে এসেছে চারিদিকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নুরুল হক নুর চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে এসে নতুন সুরে কথা বলছেন। তিনি বলছেন তাকে যারা পিটিয়েছে তাদের বিচার না করলে গলায় গামছা পরাবেন, এমন একটা হুমকি তিনি দিচ্ছেন। কিন্তু নুরুল হক নুরকে বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে।’
আইকে/টিকে