আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা ইন্টারনেট বন্ধ করার পক্ষে না। আমি চাই ইনফরমেশন ফ্লোটা চালু থাকুক। আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। রাতের অন্ধকারের ভোট চাই না। আমরা চাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সবার দৃষ্টিগোচর হয় এমন নির্বাচন।’
রবিবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়সভায় আলোচনার বিষয় তুলে ধরে সিইসি জানান, আগামী নির্বাচনটা সুন্দর ও ফেয়ার করার জন্য কি কি চ্যালেঞ্জ সামনে আসতে পারে।
কিভাবে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারি, এ বিষয়ে একটু আলোচনা করছি কর্মকর্তাদের সঙ্গে। আলোচনা হয়েছে, এর মধ্যে অনেকগুলো বিষয় কিন্তু উঠে আসছে। যে সিকিউরিটি প্রশ্নের কথা যেটা আসছে, রিসেন্টলি আপনারা দেখছেন যে আমাদের হিল একটা সমস্যা হয়েছে, এখানে মব ভায়োলেন্স হয়। এসব বিষয় আসছে আলোচনায়।
তারপরে সোশ্যাল মিডিয়ার যে অপব্যবহার, এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এনসিপির প্রতীক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যে দল নিবন্ধন পায়, তাদের আমাদের যে নির্ধারিত প্রতীকের তালিকা আছে ওখান থেকে প্রতীক নিতে হয়। এনসিপির প্রতীক যেহেতু আমাদের নির্ধারিত তালিকা নেই, এজন্য আমরা এটা দিতে পারিনি।’
এখন আর দেওয়ার সুযোগ আছে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিধান হলো যে, আমাদের যে তালিকাভুক্ত প্রতীক আছে ওখান থেকে নিতে হবে। এখন পর্যন্ত তালিকার বাইরে আমরা কাউকে দিইনি।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা বলছেন শাপলা প্রতীক ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এনসিপিতে যারা নেতৃত্বে আছেন তারা কিন্তু ২০২৪ এর আন্দোলনে একটিভলি পার্টিসিপেটলি ইনভলভ ছিলেন। এই দলটা যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা গণতন্ত্র আনার প্রতি নিজেরা বাধা সৃষ্টি করবেন, এটা আমি মনে করি না। আমি তাদের দেশপ্রেমিক ভাবি। এনসিপিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভ্যুত্থানে যোগদান করেছিলেন। সুতরাং তারাও দেশের মঙ্গল চান। তারাও দেশের ভালো চান। তারাও দেশের গণতন্ত্র চান। আমার বিশ্বাস এবং যাতে গণতন্ত্রের উত্তরণটা যাতে সুন্দর হয়, সুষ্ঠু হয়, সেই একটা পরিবেশে উনারা সম্মতি দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে রাজনীতিবিদরা জানেন এবং বিশেষ করে এনসিপির নেতৃত্ব ফুললি সচেতন, আমাদের সীমাবদ্ধতা জানেন। আমি কোনো শঙ্কিত নই, ইলেকশনে পার্টিসিপেশন সম্পর্কে। আই এম ফুললি কনফিডেন্ট, আপনারা দেখবেন ওয়েট করেন।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে সহযোগিতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করবে এমন কোনো চিন্তা আমাদের নেই। আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। আপনাদের পার্টনার হিসেবে পেতে চাই। কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনা যদি ঘটে দয়া করে ফ্যাক্ট চেকিং না করে সংবাদ পরিবেশন করবেন না। শেয়ার করার আগে নিশ্চিত হতে হবে এই ঘটনাটা সঠিক কিনা।’
তিনি বলেন, ‘একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই। মানুষের জন্য একটা ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। প্রতিটা বাংলাদেশি যাতে ভোট দিতে পারেন। আমরা বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের ভোটের ব্যবস্থা করার উদ্যোগটা নিয়েছি, এটা তো আগে ছিল না।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টা কিন্তু এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস। এটা চলতে থাকবে। নির্বাচন পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে। নির্বাচনে যাতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার না হয়, সে লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘চট্টগ্রামের ভোটের ইতিহাসটা বদলাতে চাই। আগের মতো যাতে না ঘটে। যাতে একটা সুষ্ঠু ভোট হয়, সেই বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।’
এমআর/এসএন