ভাড়া নির্ধারণে বাজারের সঙ্গে সমন্বয় আনতে রেলওয়ের আগ্রহ

বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া নির্ধারণ এবং আয় বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে রেলওয়ের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, তবে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর রেল ভবনে সড়ক, রেলপথ, যোগাযোগ অবকাঠামো ও পরিবহন সম্পর্কিত খাত নিয়ে কাজ পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোড (আরআরআর) আয়োজিত এক মতবিনিময় তিনি এ কথা বলেন।

আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের এখন আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। এক টাকা আয় করতে আমরা দুই টাকা ব্যয় করি। এটি আগে আরও বেশি ছিল, তখন এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা ব্যয় হতো। আমাদের পরিকল্পনা হলো আয়-ব্যয় পার্থক্য কমিয়ে আনা এবং ভাড়া বাড়িয়ে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো। আমাদের বর্তমান ভাড়া প্রায় ১০ বছর আগের মূল্যে নির্ধারিত, সেই সময় থেকে মেইনটেন্যান্স, স্টাফ বেতনসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে। পেনশনেও প্রায় ১০০০ কোটি টাকা খরচ হয়, যা অপারেটিভ কস্টের অংশ।

তিনি বলেন, আমাদের মোট আয়ের ৮০–৯০ শতাংশ আসে ট্রেন অপারেশন থেকে। বাকি ১০ শতাংশ আসে নন-রেল ব্যবসা থেকে, যেমন অপটিক্যাল ফাইবার, রেলওয়ে ল্যান্ড এবং স্ক্র্যাপ। যদিও স্ক্র্যাপের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভরশীল, আমরা যা পারি তা থেকে আয়ের সুযোগ বাড়াচ্ছি। এছাড়া নতুনভাবে ল্যান্ড ব্যবহার এবং অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের মাধ্যমে আমরা আয়ের ধারা আরও বৃদ্ধি করতে চাই।

রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, বর্তমানে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত রোলিং স্টক ও ইঞ্জিন নেই, তাই সব চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ ঢাকা-কক্সবাজার রুটে সাম্প্রতিক চার দিনের বন্ধের সময়ে প্রায় ১০০ শতাংশ যাত্রী উপস্থিতি থাকলেও সক্ষমতার অভাবে আমরা সব চাহিদা পূরণ করতে পারিনি। তবে আমরা নতুন কোচ এবং রোলিং স্টক যোগ করার মাধ্যমে দ্রুত এই সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা নিয়েছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে সম্প্রতি আয়ের ধারা উন্নত করতে সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যাত্রী চাহিদা থাকলেও যথাযথ ইঞ্জিন ও কোচের অভাবে পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। রেলওয়ে ধাপে ধাপে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করে আয়ের ধারাকে বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে এবং বর্তমানে বিদ্যমান ভাড়া বাড়ানো এবং বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মো. আফজাল হোসেন বলেন, রেলওয়ের আয়ের উৎস সম্প্রসারণ, কোচ সংযোজন এবং বর্তমান সক্ষমতার উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও টেকসই এবং লাভজনক রেল সেবা নিশ্চিত করতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবহন সেক্টরে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলামসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।


আইকে/এসেএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দুজনের সমান চেষ্টায় সম্পর্ক টিকে থাকে: সোমরাজ Nov 28, 2025
img
হংকংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১২৮ Nov 28, 2025
img
টঙ্গীতে জোড় ইজতেমায় এক মুসল্লির মৃত্যু Nov 28, 2025
img
সৌদি আরবে শেখ হাসিনাকে মিথ্যাবাদী বলে : এ্যানি Nov 28, 2025
img
আমাকে হারাতে জেলা বিএনপির বাজেট ১০০ কোটি টাকা : আলতাফ হোসেন চৌধুরী Nov 28, 2025
img
মহাখালীতে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন Nov 28, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হলো আরো ৩৯ বাংলাদেশিকে Nov 28, 2025
img
খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় : মির্জা ফখরুল Nov 28, 2025
img
কামাল দিয়ে শুরু হবে এবং তারপর... : শফিকুল আলম Nov 28, 2025
img
জেলেনস্কি সরকার অবৈধ, সমঝোতা অর্থহীন : পুতিন Nov 28, 2025
img
শারীরিক প্রতারণা বিতর্কে এবার মুখ খুললেন কাজল ও টুইঙ্কেল Nov 28, 2025
img
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বড় ভাইয়ের জানাজায় অংশ নিলেন সাবেক মেয়র নজরুল Nov 28, 2025
img
রাজশাহীর প্রধান কোচের দায়িত্বে হান্নান সরকার Nov 28, 2025
img
সেলিম হায়দারের মৃত্যুতে রুনা লায়লার শোক প্রকাশ Nov 28, 2025
img
ভারতীয় যুদ্ধবিমান কিনবে না আর্মেনিয়া Nov 28, 2025
img
হিব্রু ভাষায় নাম রাখা হলো সিদ্ধার্থ-কিয়ারা-র রাজকন্যার Nov 28, 2025
img
কেন ভেস্তে গিয়েছিলো ইমরান খানের সঙ্গে রেখার বিয়ে! Nov 28, 2025
img
একটা ছবি মানেই আর্টিস্টদের কাছে একটি সন্তান: কোয়েল মল্লিক Nov 28, 2025
img
দেশের মানুষ এখন আর চাঁদাবাজি ও ডার্টি পলিটিক্স চায় না : সেলিম উদ্দিন Nov 28, 2025
img
স্থল অভিযান খুব শিগগিরই শুরু হবে : ট্রাম্প Nov 28, 2025