বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেছেন, একজন শিক্ষার্থী ১২ বছর ধরে পড়াশোনা করে, এসএসসি পর্যন্ত ভালো ফল করে, উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়- অথচ নির্বাচনী পরীক্ষায় কিছুটা কম করলেই তাকে টিসি (ছাড়পত্র) দিয়ে দেওয়া হয়, এটি অমানবিক ও দায়িত্বহীন আচরণ।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এমন কথা বলেন।
প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, অনেক বিশেষায়িত ও নামকরা কলেজে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হচ্ছে যাতে শতভাগ পাসের হার বজায় থাকে। কেউ টেস্ট পরীক্ষায় ৫৫ শতাংশ নম্বর পেলেও তাকে ফেল ঘোষণা করা হচ্ছে, কারণ প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের পাস রেট ১০০ শতাংশ দেখাতে চায়। এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্যায়।
তিনি বলেন, যে শিক্ষার্থী মার্জিনাল পর্যায়ে আছে, সে হয়তো পরবর্তী কয়েক মাসে প্রস্তুতি নিয়ে ভালো করতে পারবে। কিন্তু শুধু অনুমান বা পূর্বাভাসের ভিত্তিতে তাকে বাদ দেওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত। আমরা এ ধরনের প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি।
তিনি বলেন, যে টিসি দেওয়া হয়, সেটি বাস্তবায়ন না করা ওই প্রতিষ্ঠানেরই দায়। কারণ, শিক্ষার্থী কেন কম করেছে- সেটা বোঝা ও সংশোধনের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠান নিজের দায় এড়িয়ে ছাত্রের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আমরা চাই না পাসের হার নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় পড়ে শিক্ষার্থীরা পদদলিত হোক।
সভায় ঢাকা মহানগরী ও জেলা পর্যায়ের ফলাফলের বৈষম্য নিয়েও আলোচনা হয়। চেয়ারম্যান জানান, শরীয়তপুরে পাসের হার ৪২ শতাংশ, গোপালগঞ্জে ৪২.২৮, কিশোরগঞ্জে ৪৮.৫, টাঙ্গাইলে ৪৪ এবং মানিকগঞ্জে ৪৫ শতাংশ। আরবান ও রুরাল অঞ্চলের মধ্যে এখনো বড় পার্থক্য রয়েছে। এর পেছনে শিক্ষকসংখ্যার ঘাটতি, সুযোগ-সুবিধার অভাব এবং শিক্ষার মানে বৈষম্য দায়ী।
প্রফেসর এহসানুল কবির বলেন, আমাদের এখন উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে আরও বিশ্লেষণ করতে হবে- কোথায় ঘাটতি, কোথায় শিক্ষক সংকট। এই কাজ আমরা শুরু করেছি।
এর আগে, এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ।
এসএন