শুধু ফল খেয়েই বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পোল্যান্ডের তরুণী করোলিনা ক্রিজ্যাক। বয়স মাত্র ২৭, কিন্তু বছরের পর বছর ফল-নির্ভর খাদ্যাভ্যাস শরীরকে এতটাই ভেঙে দিয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারাতে হলো তাকে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে করোলিনা বালির সুমবেরকিমা হিল রিসোর্টে ওঠেন। সেখানে একটি বিলাসবহুল ভিলা ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু হোটেল কর্মীরা তাকে দেখে হতভম্ব—চোখ গর্তে ঢুকে গেছে, গলার হাড় বেরিয়ে আছে, শরীর কেবল চামড়া ও হাড়ের স্তূপ।
হোটেল কর্মীদের ভাষায়, করোলিনাকে দেখলে মনে হতো তিনি যেন প্রতিদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। একপর্যায়ে তিনি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে নিজের পায়ে হাঁটাও সম্ভব ছিল না। পুষ্টিহীনতায় তার দাঁত পচে গিয়েছিল, নখ হলুদ হয়ে গিয়েছিল, ত্বক নিস্তেজ ও বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল।
কর্মীরা চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করলেও করোলিনা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তার বিশ্বাস ছিল-‘ফলই শরীরকে পরিশুদ্ধ রাখে’। কিন্তু তিন দিন পর এক বন্ধু কোনো যোগাযোগ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানালে, দরজা খুলে দেখা যায় তিনি নিথর হয়ে পড়ে আছেন।
চিকিৎসকেরা জানান, করোলিনার মৃত্যু হয়েছে অপুষ্টি ও অনাহারের কারণে। মৃত্যুর সময় তার ওজন ছিল মাত্র ২২ কেজি। দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টিতে তিনি অস্টিওপরোসিস ও অ্যালবুমিনের ঘাটতিতে ভুগছিলেন।
বন্ধুরা বলেন, কৈশোর থেকেই নিজের শরীর নিয়ে অনিশ্চয়তা ও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতেন করোলিনা। পরে যোগব্যায়াম ও ভেগানিজমের প্রতি ঝোঁক তাকে ঠেলে দেয় ‘ফ্রুটারিয়ানিজম’-এর দিকে যেখানে খাদ্যতালিকায় থাকে শুধু ফল।
করোলিনার মৃত্যু যেন সতর্কবার্তা সব ‘ভাইরাল’ ডায়েট ট্রেন্ড যে স্বাস্থ্যকর নয়, বরং কখনও কখনও তা হতে পারে মৃত্যুরই আরেক নাম।
এবি/টিএ