যুক্তরাষ্ট্রের মনোনীত রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন জানিয়েছেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে তিনি কাজ করবেন।

তিনি বলেন, ‘যদি অনুমোদন পাই, তাহলে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত তার ভবিষ্যৎ উত্তরসূরির সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলব, যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়। উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশের যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে।’

গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে তার মনোনয়ন শুনানিতে অংশ নেন ক্রিস্টেনসেন। শুনানির উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক কমিটিকে এসব কথা বলেন।

ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি সরকারের পতন হয়। আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার ও নতুন পথ বেছে নেবে। যা হবে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন।’

ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা ক্রিস্টেনসেন সিনিয়র ফরেন সার্ভিসের একজন ক্যারিয়ার সদস্য। অনুমোদন পেলে তিনি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর এক্সট্রা অর্ডিনারি অ্যান্ড প্লেনিপোটেনশিয়ারি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানের কারণে এটি একটি উন্মুক্ত, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘আমার ফরেন সার্ভিস জীবনে বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন নীতি নিয়ে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যার মধ্যে ঢাকায় আমার পূর্ববর্তী দায়িত্ব পালনও অন্তর্ভুক্ত। তাই আমি এর গুরুত্ব এবং এখানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত।’

তিনি বলেন, নতুন এশীয় টাইগার হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় এগিয়ে যাচ্ছে। ‘অনুমোদন পেলে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়াতে, বাণিজ্য বাধা ও ঘাটতি কমাতে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে কাজ করব।’

ক্রিস্টেনসেন বলেন, গত আট বছর ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শরণার্থী জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। অনুমোদন পেলে আমি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও কার্যকর সমাধানে কাজ করব।

তিনি বলেন, যদি অনুমোদন পাই, তাহলে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের দক্ষ নারী-পুরুষদের নেতৃত্ব দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়া আমার জন্য সম্মানের বিষয় হবে। আজ আমাকে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনাদের প্রশ্নের অপেক্ষায় আছি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ক্রিস্টেনসেন।

আইকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পররাষ্ট্র ক্যাডার থেকে চাকরিচ্যুত হলেন ছাত্রলীগ নেতা Oct 25, 2025
img
তারেক রহমানের মধ্যে কোনো হিংসা নেই : রিজভী Oct 25, 2025
img
যে তিন দলের তোষণ করল সরকার, তারাই এখন অভিযোগ করছে : নুরুল হক নুর Oct 25, 2025
img
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নির্বাচিত হলেন প্রেস সচিবের ভাই Oct 25, 2025
img
সালমান শাহ মামলার আসামিদের দেশত্যাগে বাধা, ইমিগ্রেশনে চিঠি Oct 25, 2025
img
নওফেলের অনুসারী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার Oct 25, 2025
img
প্রাথমিকে ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী সব সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে : গোলাম পরওয়ার Oct 25, 2025
img
নেটফ্লিক্সে একক নায়িকা হিসেবে ঝলক দেখালেন আহসাস চন্না Oct 25, 2025
img
হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ডের ৫ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শুরু Oct 25, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো এলো ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম Oct 25, 2025
সংঘাতের জন্য সবাই মুখিয়ে: মাহফুজ আলমের সতর্কবার্তা | Oct 25, 2025
img
ইসকনের কার্যক্রম তদন্তের দাবি জানাল হেফাজত Oct 25, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থা হারিয়েছে ইরান: আরাগচি Oct 25, 2025
img
'আমি বিদেশে উঠিনি, মুম্বাইয়েই আছি', ভুয়া খবরে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী তাপসী Oct 25, 2025
img
আ. লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সংসদ গঠনের আহ্বান Oct 25, 2025
img
প্রশাসন হচ্ছে ‘ন্যাশনাল কারেন্ট পার্টি’: হাসনাত আবদুল্লাহ Oct 25, 2025
img
আবু বাকের মজুমদারকে লক্ষ্য করে ককটেল হামলা Oct 25, 2025
img
সিলেটে নির্দেশ অমান্য করে ‘মিনিস্টার বাড়ি’ ভাঙ্গায় ঐতিহ্য রক্ষায় মানববন্ধন Oct 25, 2025
img
২০২৭ বিশ্বকাপ নিয়ে ধোঁয়াশা কোহলি-রোহিতের Oct 25, 2025
img
সালমান শাহর লাশ দেখে মাটিতে বসে পড়েছিলেন আহমেদ শরীফ Oct 25, 2025