সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কামরুজ্জামান কামরুলকে নির্বাচনী খরচের জন্য ১০ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন এক কর্মী। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে সেই চেক কর্মীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন কামরুজ্জামান কামরুল।
চেকটি দিয়েছিলেন তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের মান্দিয়াতা গ্রামের নূর কাসেম (৩৭)। তিনি পেশায় কৃষক, পাশাপাশি ইট কেনাবেচার ব্যবসা করেন। লেখাপড়া খুব বেশি জানেন না, কোনো মতে স্বাক্ষর করতে পারেন।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বর্তমানে সুনামগঞ্জ-১ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে জামালগঞ্জের সাচনা বাজারে দলের ৩১ দফার প্রচার ও ধানের শীষের পক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তাকে ১০ লাখ টাকার চেক দেন নূর কাসেম। সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কেউ ফুল, কেউ টাকা, কেউ কাগজের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান কামরুজ্জামানকে। ওই সময় নূর কাসেম মঞ্চে উঠে তার হাতে ১০ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন।
নূর কাসেম বলেন, ‘আমি কামরুল ভাইরে ভালা পাই। উনি গরিবের লাগি কাজ করেন। তাই মনের আবেগে দিছি। আমার অত টেকা নাই। ব্যাংকে এখন আছে ৩ হাজার ৪১২ টাকা। যদি কেউ কয় টেকা দিত অইব, শ্রীপুর বাজারে আমার একটা ভিটা আছে, ইটা বিক্রি কইরা দিমু।’
তিনি আরও বলেন, সমাবেশে মানুষ দেখে আমি আবেগাপ্লুত হই। সবাই মালা দিতেছিল, কেউ ফুলের, কেউ টেকার। আমার মনে হইছে আমি কিছু না দিলে স্ট্রোক করমু। তাই একটা চেকের মালা দিছি। আমি খারাপ মানুষ না, কাজ করে ভাত খাই। রাজনীতি বেশি বুঝি না, কামরুল ভাইরে ভালা লাগে তাই দিছি।
আরপি/এসএন
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সেই চেক ফিরিয়ে দিয়েছেন কামরুজ্জামান কামরুল।
তিনি বলেন, ওই কর্মী ভালোবেসে চেকটা দিয়েছেন, কিন্তু আমি সেটা নিতে পারি না। এটা আমি নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা হিসেবেই দেখছি। সমাবেশে কেউ ১০, কেউ ১০০, কেউ ৫০০ টাকার মালা দিয়েছে তেমনি নূর কাসেমও একটা চেক দিয়েছিলেন। আজ বিকেলে আমি সেটি ফেরত দিয়েছি।
আরপি/এসএন