রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বা ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে এখনো দুজন আছেন আসিফ আহমদ এবং মাহফুজ আলম। নির্বাচনে নামবেন কিনা সেটাই এখন রাজনৈতিক আড্ডা থেকে টিভির টকশো, রাজধানী থেকে গ্রাম সবখানে সবচেয়ে আলোচিত জিজ্ঞাসা। প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে যে ইঙ্গিতগুলো পাওয়া যাচ্ছে তাতে এই দুজনকে ঘিরে ক্ষমতার ক্যালকুলাসের নতুন ভাঁজ পড়ছে। একদিকে ছাত্র অভ্যুত্থানের নৈতিক ম্যান্ডেট অন্যদিকে প্রশাসন, নির্বাচন সব মিলিয়ে উপদেষ্টা থেকে প্রার্থী ট্রানজিশনটি কেবল ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়।
অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বনাম রাজনীতি দ্বন্দের লিটমাস টেস্টে দাঁড়িয়ে গেছে। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি এই তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কিছু উপদেষ্টার পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে। ফলে ফোকাস আরো তীব্র হয়েছে। এখানে মূল প্রশ্ন দুটো। প্রথমত, উপদেষ্টা থাকা অবস্থায় নির্বাচনে নামা উচিত কিনা? দ্বিতীয়ত, নামলে সেটি কি সরকারের নিরপেক্ষতা আখ্যানকে দুর্বল করবে?
জিল্লুর বলেন, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রকাশ্যে বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর মন্তব্যে সরকার বিচলিত নয়। মাঝেমধ্যে এমন অভিযোগ কৌশলগত কারণেও আসে। কিন্তু অভিযোগগুলো যখন একই সপ্তাহে ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে ধারাবাহিকভাবে ওঠে তখন তা কেবল রাজনীতির স্বর বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
কারণ নির্বাচন সামনে রেখে আস্থাহীনতার পরিবেশ— সরকার, রাজনৈতিক দল ও আমলাতন্ত্র এই তিন স্তরেই তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থায় নীতিগত পরামর্শ উঠে আসছে সরকারের ভেতর থেকে।
জিল্লুর আরো বলেন, ছাত্র অভ্যুত্থানের ন্যারেটিভটিও একটা মোরাল হাই গ্রাউন্ড হিসেবে কাজ করে। নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পরিষদ ছেড়ে এনসিপিতে গেছেন। তারপর থেকে ছাত্র প্রতিনিধিদের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স কমে গেছে বলে দলটির ভেতরেই আলোচনা।
ফলে বাকি দুজনও যদি একই সময়ে সরে আসেন এনসিপি বলয়ের সঙ্গে সরকারের লাইফলাইনটি আরো দুর্বল হতে পারে। এ উপলব্ধি হয়তো কৌশলে তাদের একজনকে ভেতরে রাখার তাগিদ জোগাচ্ছে।
এবি/টিকে