ক্ষমতায় গেলে নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়ার যে আশ্বাস দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান দিয়েছেন, তা উদ্ভট এবং ডিজায়ার বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান। তিনি মনে করেন, ‘বিএনপিকে বিপদে ফেলতেই জামায়াত আমির এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’
আজ সোমবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন জাহেদ উর রহমান।
তিনি বলেন, ‘জামায়াত আমির মোটেও বোকা মানুষ নয়।
এই দলটাও এত বোকা নয় যে তারা এই ধরনের (নারীদের জন্য কর্মঘণ্টা ৫ ঘণ্টা) একটা হাস্যকর দাবি সামনে আনবে, প্রতিশ্রুতি সামনে আনবে। আমার কাছে মনে হয়, এটা আসলে তারা বিএনপিকে বিপদে ফেলার জন্য করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সম্প্রতি জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘মায়েরা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন আবার সেই সন্তানকে দুধ পান করিয়ে লালন-পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি একজন পেশাজীবীর দায়িত্বও পালন করছেন।
ক্ষমতায় গেলে মায়েদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেওয়া হবে। ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে পাঁচ ঘণ্টা করা যায় কি না—সে বিষয়ে ভাবছে জামায়াত।’
জামায়াত যদি ক্ষমতায় যায় এবং এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে তাহলে কৌশলে নারীদের চাকরিতেই নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেন জাহেদ উর রহমান।
এই প্রতিশ্রুতির সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা একটা ডিসক্রিমিনেশন।
পুরুষের জন্য আট ঘণ্টা আর নারীর জন্য পাঁচ ঘণ্টা। একই রকম কাজ করে পুরুষ আর নারী সমান বেতন পাবে। তাহলে সব পুরুষরাও বলবে, আমি পাঁচ ঘণ্টায় আট ঘণ্টার কাজ করে ফেলব। সত্যিকার অর্থেই তারা পাঁচ ঘণ্টায় ৮ ঘণ্টার দায়িত্ব পালন করতে চাইবে। এ রকম পুরুষ পাওয়া যাবে।’
জামায়াতের এসব প্রতিশ্রুতি বিএনপিকে চাপে ফেলবে মন্তব্য করে জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘মাঠে জামায়াত ইসলামী অদ্ভুত এবং উদ্ভট অনেকগুলো দাবি বা প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে নামবে। মাঠে প্রতিশ্রুতি দেবেন, এসব প্রতিশ্রুতি ইশতেহারেও আনবে। যেগুলো কোনোভাবেই বাংলাদেশে কার্যকর করা যাবে না। কার্যকর করা না গেলেও জামায়াত এসব প্রতিশ্রুতিতে বিএনপি চাপে পড়বে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, জামায়াতের দিক থেকে এই ধরনের আরো প্রচুর আকাশকুসুম প্রতিশ্রুতি আসবে। বিএনপিকে যুক্তি দিয়ে জনগণের সামনে এগুলো বোঝাতে হবে। নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে যাতে কোনো একটা দল মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে না পারে।’
জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘শুধু জামায়াত, বিএনপি, এনসিপি না, যারা যারা নির্বাচন করবে কেউ যাতে উদ্ভট কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের কাছে ভোট চাইতে না পারে। যে যা-ই বলবেন কমপ্লিট হতে হবে, সেটা কিভাবে তারা করবেন, সেই ডিটেইল প্ল্যানিং দিতে হবে জনগণকে।’
আইকে/টিএ