সামরিক খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলতে চীন কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা নিয়ে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিপসিকের তৈরি উন্নত এআই মডেল।
গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নরিনকো উন্মোচন করে নতুন একটি সামরিক যান নরিনকো পি সিক্সটি। ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম এই যানটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুদ্ধ-সহায়ক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এটি ডিপসিকের প্রযুক্তিগত সহায়তায় তৈরি হয়েছে।
রয়টার্সের হাতে পাওয়া গবেষণাপত্র, পেটেন্ট ও ক্রয়-নথি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চীনা সেনাবাহিনী (পিএলএ) এখন এমন এআই প্রযুক্তি উন্নয়ন করছে যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা রাখে।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিপসিকের সহায়তায় চীনের এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন এআইচালিত রোবট কুকুর ব্যবহারের দিকেও এগোচ্ছে, যা একই সঙ্গে নজরদারি চালাতে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক্ষ্য শনাক্ত করতে পারবে।
২০২৪ সালের নভেম্বরে পিএলএ একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, এসব রোবট কুকুর হুমকি শনাক্ত ও বিস্ফোরকজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তবে ওই দরপত্রের কার্যক্রম কতদূর অগ্রসর হয়েছে, তা রয়টার্স নিশ্চিত করতে পারেনি।
এর আগে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, এআই রোবোটিকস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিট্রি সামরিক মহড়ায় সশস্ত্র রোবট কুকুর ব্যবহার করেছে। পিএলএর জন্য রোবট তৈরির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কাছে জানতে চাইলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
এছাড়া চীনের সামরিক সংস্থাগুলো ক্রমাগত স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধ-প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। রয়টার্সের দেখা পেটেন্ট ও দরপত্রগুলোর মধ্যে অন্তত দুই ডজন নথিতে উল্লেখ আছে, লক্ষ্য শনাক্তকরণ ও আক্রমণ পরিচালনায় ড্রোনে এআই সংযুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এসব প্রযুক্তি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে অস্ত্রগুলো মানুষের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পরিচালিত হতে পারে।
সুত্র- রয়টার্স