পর্যটন নির্ভর দেশ মালদ্বীপে লাখেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। দেশটিতে শুক্রবারের জুমার খুতবা বাংলায় অনুবাদ করা হলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ধর্মীয় বার্তাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এতে দুইদেশের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও শক্তিশালী হবে।
সম্প্রতি মালদ্বীপের ধর্মমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শাহিম আলী সাঈদের সঙ্গে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের এক সৌজন্য সাক্ষাতে শুক্রবারের জুমার খুতবা বাংলায় অনুবাদ করার প্রস্তাব রাখেন হাইকমিশনার।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের পার্সোনাল অফিসারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াসহ শিক্ষা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও জোরদারে সম্মত হয় দুই দেশ। একইসাথে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধর্মীয় সম্পৃক্ততা, ইসলামিক জ্ঞান বিনিময় এবং মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধিতেও সম্মত হয়েছেন দুই কূটনীতিক।
সাক্ষাতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা আরও কাঠামোবদ্ধ করতে দ্রুত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এর মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ, ইসলামিক গবেষক ও শিক্ষাবিদদের বিনিময় কার্যক্রম আরও সহজ হবে বলে উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ শাহিম আলী সাঈদ বলেন, মালদ্বীপ বাংলাদেশকে একটি ভ্রাতৃপ্রতিম ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার দেশ হিসেবে বিবেচনা করে। এসময় বাংলাদেশের সহযোগিতার সম্ভাব্য কয়েকটি ক্ষেত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ইসলামিক আলেম ও বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাই।
এছাড়াও মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যাকাত ব্যবস্থাপনা একটি প্রশংসনীয় মডেল। এটি আমাদের দেশেও অনুসরণযোগ্য হতে পারে। একইসাথে বাংলাদেশের মানবসম্পদ, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ খাতে ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং দু’দেশের ধর্মীয় বন্ধন আরও সুদৃঢ় করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এবং বাংলাদেশ মালদ্বীপের সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি জোরদারে পাশে থাকবে। দুই দেশের জনগণ বিশ্বাস, মানবতা ও সৌহার্দ্যরে মাধ্যমে আরও ঘনিষ্ঠ হোক এটাই আমাদের কামনা হাইকমিশনার। এসময় হাইকমিশনার প্রস্তাব দেন, শুক্রবারের জুমার খুতবা বাংলায় অনুবাদ করা হলে মালদ্বীপে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ধর্মীয় বার্তাগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এতে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও শক্তিশালী হবে বলে যোগ করেন তিনি।
আলোচনায় দুই দেশ শিক্ষাখাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এবং মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেন হাইকমিশনার। এসময় মন্ত্রী শাহিম আলী সাঈদ জানান, মালদ্বীপ সরকার এ বিষয়ে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের জন্য মালদ্বীপের শিক্ষার্থীদের অর্থায়ন ও সহায়তা প্রদান করবে।
এসএস/টিএ