নীতিনির্ধারণে নমনীয়তা ও নাগরিক দায়িত্বের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সঠিক দিকনির্দেশনা, সময়োপযোগী সমন্বয় এবং শিক্ষার্থীদের নাগরিক দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা, ২০২৫-এ বিজয়ী দশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রফেসর ইউনূস একথা বলেন।

শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রতিযোগিতায় অংশগহণলব্ধ অর্জিত অভিজ্ঞতা ও নীতি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এই বিজয় অর্জনের জন্য। এটা বহু জনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ফলাফল।’

তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার আসরটি আসলে এক ধরনের ক্যাবিনেট, যেখানে বিতর্ক ও আলোচনা হয়। ‘তোমরা কাল্পনিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তার ওপর বিতর্ক করছো।

ভবিষ্যতে এই এক্সারসাইজটাই কাজে লাগবে। কারণ একদিন তোমাদেরই আসল ক্যাবিনেট রুমে বসে নীতি নির্ধারণ করতে হবে— সেটা সরকারি, বাণিজ্যিক কিংবা ব্যক্তিগত পর্যায়েই হোক,’ বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সুন্দর প্রস্তাব, বড় বাজেট বা লোকবল থাকলেও ভুল নীতির কারণে সবকিছু মাঠে মারা যায়। নীতি যদি সঠিক হয়, তাহলে জিনিসটা সুষ্ঠুভাবে ঠিক জায়গায় পৌঁছায়।’

তিনি বলেন, ‘পলিসি ব্যর্থতার জন্য অনেক কিছু আমাদের শেষ হয়ে যায়। কখনো নীতি একেবারে ব্যর্থ হয়, কখনো দুর্বল হয়—ফলে প্রত্যাশিত ফল আসে না। নীতি শুধু সরকার বা ব্যবসা নয়, ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা পলিসি নির্ধারণ করে, তাদের পুরো প্রেক্ষাপট বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন একজন চিকিৎসক রোগীর অবস্থা জেনে প্রেসক্রাইব করেন, তেমনি নীতিনির্ধারককেও জানতে হয় কোন সিদ্ধান্তের কী প্রতিক্রিয়া হবে।’

পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নীতি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুনিয়া বদলে গেলেও যদি আমরা পুরনো নীতিতে আটকে থাকি, তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না। পারিপার্শ্বিকতার পরিবর্তন, উদ্দেশ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে নীতিরও পরিবর্তন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেদিন প্রকৃত ক্যাবিনেট রুমে বসে সত্যি সত্যি সারা দেশের পলিসি নির্ধারণ হবে, সেদিন এই অনুশীলনের গুরুত্ব বোঝা যাবে।অংশগ্রহণই গুণগত মান অনেক উন্নত করেছে।’

নাগরিক দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাগরিক মানে মালিক। মালিক হিসেবে আমাদের হক আছে জানতে— যে পলিসি হচ্ছে সেটা সঠিক হচ্ছে কি না। ভুল দিকে গেলে সোচ্চার হয়ে বলতে হবে। নাগরিক যদি চুপ থাকে, তাহলে কিছুই সোজা হবে না।’

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘চিন্তা করো— নীতিটা তোমার ক্ষেত্রে ঠিক হচ্ছে কি না, দেশের ক্ষেত্রেও ঠিক হচ্ছে কি না। এটাও তোমার কাজ, নাগরিক হিসেবে।’

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাকির নায়েকের বাংলাদেশ সফর নিয়ে দিল্লির কড়া প্রতিক্রিয়া Oct 31, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশন বর্তমান সংকট তৈরি করেছে: মির্জা ফখরুল Oct 31, 2025
img
ছেলের পরিচালনা নিয়ে রসিকতা করে আলোচনায় শাহরুখ খান Oct 31, 2025
img
জুলাই সনদ নিয়ে দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে : জাহেদ উর রহমান Oct 31, 2025
img
হোয়াইটওয়াশ এড়াতে শেষ লড়াইয়ে বাংলাদেশ, বাদ জাকের! Oct 31, 2025
img
বান্ধবীর কুস্তি দেখতে সরকারি বিমানে গিয়ে বিতর্কে এফবিআই প্রধান Oct 31, 2025
img
সংস্কার প্রস্তাব না মানা নতুন রাজনৈতিক সংকট তৈরির অপপ্রয়াস: ডা. তাহের Oct 31, 2025
img
এভারেস্টে উদ্ধার অভিযানে গিয়ে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার Oct 31, 2025
img
হারিকেন মেলিসার তাণ্ডবে প্রানহানির সংখ্যা বেড়ে ৪৪ Oct 31, 2025
img
মায়ামিতে নতুন চুক্তির পর কত বেতন পাবেন মেসি Oct 31, 2025
img

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে

খোকন ও তার স্ত্রীর আয়কর নথি জব্দের অনুমতি Oct 31, 2025
img
নতুন আয়োজনে ফিরছে ‘বাহুবলী’, ভাঙতে পারে ‘পুষ্পা ২’-এর রেকর্ড Oct 31, 2025
img
দীর্ঘ ৯ মাস পর পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন খুলছে আগামীকাল Oct 31, 2025
img
আজকের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির আহ্বান মুজিবুর রহমানের Oct 31, 2025
img

সংবাদ সম্মেলনে এহসানুল হক মিলন

‘বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার কারণ জানতে চেয়ে সদুত্তর পাইনি’ Oct 31, 2025
img
সৌদি প্রবাসীদের আইনি সুরক্ষা দিতেই চুক্তি: আইন উপদেষ্টা Oct 31, 2025
img
বন্যায় তলিয়ে গেছে নিউইয়র্ক, প্রাণ হারাল দুইজন Oct 31, 2025
img
তামান্নাকে নিয়ে নির্মাতা অনন্য মামুনের পোস্ট, নতুন সিনেমার জল্পনা Oct 31, 2025
img
নেত্রকোণায় অটোরিকশা-ট্রাকের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের Oct 31, 2025
img
লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে জ্যোতি-মারুফারা Oct 31, 2025