মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘গোল্ডেন ডোম’ প্রতিরক্ষা প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। প্রকল্পটির আওতায় স্পেসএক্স দুই বিলিয়ন ডলার সরকারি অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থায়ন গোপনে জুলাই মাসে ট্রাম্প স্বাক্ষরিত একটি কর ও ব্যয়সংক্রান্ত বিলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তখন কোনো নির্দিষ্ট ঠিকাদারের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পের আওতায় স্পেসএক্সকে এমন একটি বৃহৎ স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে, যা আকাশে চলমান লক্ষ্যবস্তু—যেমন মিসাইল বা যুদ্ধবিমান শনাক্ত ও ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, এই ‘এয়ার মুভিং টার্গেট ইন্ডিকেটর’ সিস্টেমে ৬০০ পর্যন্ত স্যাটেলাইট থাকতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থায় মাস্কের প্রভাব আরও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্পেসএক্স পেন্টাগনের দুটি গোপন স্যাটেলাইট প্রকল্পেও কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটির নাম ‘মিলনেট’, যা সংবেদনশীল সামরিক তথ্য নিরাপদে আদান-প্রদানের জন্য তৈরি একটি নেটওয়ার্ক। অন্যটির নাম ‘গ্রাউন্ড ট্র্যাকিং’ সিস্টেম, যা ভূপৃষ্ঠে থাকা যানবাহন পর্যবেক্ষণ ও শনাক্ত করতে সক্ষম আলাদা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব প্রকল্পে স্পেসএক্সের অংশগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশভিত্তিক প্রতিরক্ষা কাঠামোয় কোম্পানিটির ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।
তবে মার্কিন প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ইলন মাস্কের অতীত আচরণ—যেমন নাসার মহাকাশচারীদের বহনকারী স্পেসক্রাফট বন্ধের হুমকি—সরকারকে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে বহু ঠিকাদারকে অন্তর্ভুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তা মনে করিয়ে দিয়েছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ কী?
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পটিকে একটি উন্নত প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা মিসাইল শনাক্ত ও আঘাতের আগেই ধ্বংস করতে সক্ষম একটি ঢালের মতো কাজ করবে। তবে এর কাঠামো বা কার্যপ্রণালি সম্পর্কে পেন্টাগন এখনো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।
প্রকল্পটির বড় বড় চুক্তি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হয়নি। প্রতিরক্ষা দপ্তর ব্যয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে।
‘গোল্ডেন ডোম’ প্রকল্পে স্পেসএক্সের সম্পৃক্ততা নিয়ে জানতে চাইলে পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এ ধরনের প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিস্তারিত প্রকাশ করি না।’
ইএ/টিএ