কয়েক দশক আগে পিয়ংইয়ংয়ে জাপানি নাগরিক অপহরণ ঘিরে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ইস্যুতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানাই তাকাইচি। সোমবার ( ৩ নভেম্বর) জাপানের এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ করেছেন তিনি।
বহু বছর অস্বীকারের পর ২০০২ সালে উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো পিয়ংইয়ংয়ের এজেন্টরা ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে ১৩ জন জাপানি নাগরিককে অপহরণ করেছিল বলে স্বীকার করে। এসব নাগরিককে পিয়ংইয়ংয়ের গুপ্তচরদের জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি শেখানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল।
সেই সময় অন্তত ১৭ জন জাপানি নাগরিককে উত্তর কোরিয়া অপহরণ করেছে বলে জাপানের ধারণা। তবে অনেকে বলেছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। টোকিওতে এই ইস্যু নিয়ে আয়োজিত এক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে তাকাইচি বলেছেন, তিনি কিম জং উনের সঙ্গে শীর্ষ এক বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জাপান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে নতুন ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমি কিম জং উনের সঙ্গে সরাসরি মুখোমুখি বৈঠকের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাকাইচির এই প্রস্তাবে পিয়ংইয়ং এখনও প্রকাশ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
জাপানের একাধিক নেতা এর আগেও কিম জং উনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের চেষ্টা করেছেন। তবে তাদের কেউই সফল হননি।
দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কোইজুমি ২০০২ ও ২০০৪ সালে পিয়ংইয়ং সফর করেছিলেন। ওই সফরে তিনি উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা এবং কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পাঁচজন ভুক্তভোগীর প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন।
তখন উত্তর কোরিয়া দাবি করেছিল, অপহৃত আটজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। তাকাইচির পূর্বসূরি শিগেরু ইশিবা এই ইস্যুর সমাধানে টোকিও ও পিয়ংইয়ংয়ে লিয়াজোঁ অফিস স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তার এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়নি।
এদিকে, জাপান দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে; যাতে বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনায় থাকে। গত সপ্তাহে টোকিও সফরের সময় ট্রাম্প অপহৃত জাপানি নাগরিকদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তাকাইচি বলেছেন, ‘‘ভুক্তভোগীদের জীবন ও আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আমি প্রয়োজনে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। অপহরণ ইস্যুটি আমার মন্ত্রিসভার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’’
টিএম/টিএ