ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের নিজ আসন পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা ও দশমিনা) এ প্রার্থী দেয়নি বিএনপি।
             
        
একইভাবে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের নিজ আসন বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ ও মুলাদী) এ প্রার্থী দেয়নি বিএনপি।  দলের ঘোষিত ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকায় এই দুইটিসহ বিভাগের আরো ৫টি আসনে প্রার্থীর নাম নেই। বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আসন ৫টি নুরুল হক নুর এবং আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ শরীকদের জন্যই ‘খালি’ রাখা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন।
এদিন পটুয়াখালী জেলার চারটি আসনের মধ্যে ১ ও ৪ নম্বর আসনে প্রার্থী দেওয়া হলেও ২ ও ৩ নম্বর আসন শূন্য রাখা হয়। অপরদিকে বরিশালের ৬টি আসনের মধ্যে বরিশাল-৩ আসন শূন্য রাখা হয়।
পটুয়াখালী-২ আসনেও প্রার্থী দেওয়া হয়নি।
সেখানে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নাম আলোচনায় রয়েছে। স্থানীয় রাজনীতির মাঠে এখন জোটের হিসাব–নিকাশই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
ঘোষিত তালিকায় পটুয়াখালী-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। আর পটুয়াখালী-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
তবে ২ ও ৩ আসনে কেন প্রার্থী দেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে দলের ভেতরে নানা আলোচনা চলছে। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ওই দুই আসনে শরিক দলের সমন্বয় ও প্রভাবশালী সম্ভাব্য প্রার্থীদের উপস্থিতির কারণে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ স্থগিত রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। বিএনপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর সন্ধ্যায় তিনি নিজের ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘প্রিয় গলাচিপা-দশমিনাবাসী, আপনারা ধৈর্য ও আশঙ্কামুক্ত থাকুন। যেকোনো পরিস্থিতিতেই পটুয়াখালী-৩ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে ইনশাআল্লাহ।’
অন্যদিকে, ওই আসন থেকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ইতোমধ্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সমন্বয়ের ইঙ্গিতও মিলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে লিখছেন, আসনটি মূলত নুরুল হক নুরের জন্যই ফাঁকা রাখা হয়েছে।
এদিকে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) জহির উদ্দিন স্বপন, বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) এস সরফুদ্দিন সান্টু, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) রাজীব আহসান, বরিশাল-৫ (মহানগর ও সদর উপজেলা) মজিবর রহমান সরোয়ার এবং বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আবুল হোসেন খান।
তবে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) শূন্য রাখা হয়েছে। মনোনয়ন আলোচনার শীর্ষে থাকা বরিশাল-৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিএনপি। মুলাদী-বাবুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে মনোনয়ন আলোচনায় রয়েছেন দলের দুই শীর্ষ নেতা। তারা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
তবে আসনটিতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি নির্বাচনে অংশ নিলে জোটের স্বার্থে বিএনপির পক্ষ থেকে আসনটি ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে আলোচনা দীর্ঘদিনের। সেই আলোচনা আরো তীব্র করেছে আসনটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করা।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি। 
পিএ/টিএ