ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে সৃষ্টি হয়েছে ভিন্ন এক পরিস্থিতি। এই আসনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী উভয় দলের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন আপন দুই ভাই। এ নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ২৩৭ আসনের চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে প্রার্থী হিসাবে আজিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়।
 
অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। দুই ভাইয়ের এই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন এলাকার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এখন সবার নজর দুই ভাইয়ের লড়াইয়ে।
এতদিন রৌমারী উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। প্রায় গুছিয়ে নিয়েছিলেন সবকিছুই। কিন্তু বিএনপি থেকে তার বড় ভাই এবং রৌমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান প্রার্থী হওয়ায় সব হিসেব এখন নতুন করে করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে দুই ভাইয়ের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। কিন্তু একই পরিবার থেকে দুটি বড় দলের প্রার্থী হওয়ায় চলছে নানান হিসাব ও জল্পনা-কল্পনা।
কুড়িগ্রাম-৪ আসন চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭১১ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া) ভোটার ৯ জন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসনটি ঐতিহাসিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলেরই শক্ত ঘাঁটি হিসেবে কুড়িগ্রাম-৪ দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। ফলে দুই ভাইয়ের মুখোমুখি লড়াই আসনটিকে জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত আসনে পরিণত করেছে।
 
স্থানীয় এক প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, রৌমারী-চিলমারীর ইতিহাসে এমন দৃশ্য প্রথম। ভাইয়ের বিপরীতে ভাই-এটা নির্বাচনি মাঠে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
 
জামায়াতের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাক বলেন, আমার বড় ভাই বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি যদি সত্যি মনোনয়ন পেয়ে যান তাতে করে আমাকে পরাজিত করতে পারবে না। কেননা জামায়াতের জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেড়েছে। দুই ভাই প্রার্থী হলেও নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব ফেলবে না।
আজিজুর রহমান বলেন, আমার ছোট ভাই একসময় বিএনপি করতো। আমার কারণে সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তীতে জামায়াতে যোগদান করে সেই দলের প্রার্থী হয়েছে। আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা না করলে আমার পরিচয় এবং পারিবারিক ইমেজের কারণে আমার ছোট ভাই এককভাবে নির্বাচনে সুবিধা নিতে পারত। কিন্তু আমি প্রার্থী হওয়ায় সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো। জনগণ আমাকেই চাইছে।
পিএ/টিএ