যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকার উত্তর কোরিয়ায় তাদের দীর্ঘদিনের রেডিও সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে, কি সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন এই দেশটির হাজার হাজার বাসিন্দা বাইরের দুনিয়ার খবরাখবর থেকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে পড়ে গেছেন।
             
        দশকের পর দশক ধরে এই সম্প্রচারগুলো ছিল উত্তর কোরিয়ার সেইসব নাগরিকদের জন্য তথ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস, যারা নিজেদের সীমান্তের বাইরের জীবন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলেন।
পূর্বে, উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের 'রেডিও ফ্রি এশিয়া' ও 'ভয়েস অফ আমেরিকা' এবং দক্ষিণ কোরিয়ার 'ভয়েস অফ ফ্রিডম' সম্প্রচার শুনতে পারতেন। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই সম্প্রচারগুলো উত্তর কোরিয়ার মানুষদের এমন সব তথ্য শুনতে সাহায্য করতো যা তাদের সরকার জানতে দিতে চায় না, এবং এর মাধ্যমে তাদের কষ্ট সহ্য করতেও সহায়তা করতো।
কিম ইউ-জিন, যিনি ১৯৯০-এর দশকে তার মা ও বোনের সাথে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, এই পদক্ষেপকে খুবই খারাপ এবং সেখানকার মানবাধিকারের জন্য একটি গুরুতর ধাক্কা বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি ডিডব্লিউ-কে বলেন, এই সরকারগুলো (যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া) উত্তর কোরিয়ার জনগণকে তথ্য পাওয়ার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করছে। এখন তারা কেবল পিয়ংইয়ংয়ের অপপ্রচারই শুনতে পাবে।
কিম জানান, তিনি নিজে দেশত্যাগের আগে কখনো বিদেশি রেডিও শোনেননি, কারণ এটি ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক। পিয়ংইয়ং সরকার বিদেশি মিডিয়া গ্রহণকারী লোকদের ধরতে এবং শাস্তি দিতে প্রচুর সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে, যারা ধরা পড়তো তাদের প্রকাশ্য বিচার এবং কঠোর শ্রমদণ্ড, এমনকি চরম ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হতো। কিম সতর্ক করে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সরকার এই সম্প্রচারগুলোকে ভয় পায় এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি মিডিয়া শোনার বিপদ উল্লেখযোগ্যভাবে গুরুতর হয়ে উঠেছে।
আরপি/এসএন