রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ভেঙে সামাজিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে সৌদি আরব। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিধান উপেক্ষা করে পশ্চিমা ধাচের একাধিক আইন করেছে ইসলামের পবিত্র ভূমি সৌদি আরব। অথচ এই নগরীতেই জন্ম নিয়েছিলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব ও আল্লাহর প্রেরিত বার্তা বাহক হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পৃথিবীর মানুষকে অন্ধকার, কুসংস্কার এবং গোড়ামি থেকে মুক্ত করে আলোর পথে আনতে সৌদির বুকে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। নারীদের অধিষ্ঠিত করেছিলেন সম্মানজনক স্থানে। কিন্তু রাসুলের পবিত্র ভূমিতে আধুনিকতার নামে ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ নাচ-গান, কনসার্ট এবং সিনেমা প্রদর্শনীকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সৌদির ক্রাউন প্রিন্স বা যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ইউরোপের ধাচে তার দেশকে সাজাতে চাইছেন। তাই তিনি তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বের হয়ে- খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকে ব্যাপকভাবে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এছাড়া সৌদি নারীদের পশ্চিমা সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে খেলাধুলা, গাড়ি চালানো এবং পুরুষ অভিভাবক ছাড়া বিদেশে ভ্রমণেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয় সংগীত অঙ্গনেও যেন সৌদিকে পিছিয়ে থাকতে না হয় এজন্য ২০২৩ সালে রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আর্টস কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেখানে সংগীত, চিত্রকলা, নাটকসহ বিভিন্ন শিল্পবিষয়ে গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া শিশুদের ছোটবেলা থেকেই সংগীত চর্চার সুযোগ করে দিতে কিন্ডারগার্ডেনেও চালু করা হয়েছে সংগীত শিক্ষা।
এজন্য প্রথম ধাপে ১২ হাজার নারী শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৭ হাজার নারী শিক্ষককে সংগীত চর্চার জন্য নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সৌদি। এসব নারী শিক্ষক কিন্ডারগার্ডেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগীত শিক্ষা দেবেন। তারা গান, তাল-লয়, বাদ্যযন্ত্র ও স্থানীয় লোকসংগীত শেখাবেন, যাতে শিশুদের মনন ও সৃজনশীলতা বিকশিত হয়। তবে সৌদি আরবের এমন সংস্কার নিয়ে অনেক মুসল্লিদের মাঝে বেশ অসন্তোষও আছে। তারা প্রিয় নবীর জন্মভূমিতে এ ধরনের ধর্মীয় রীতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
টিএম/টিএ