মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি মামদানিকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত আছেন। তবে সফল হওয়ার জন্য তাকে ওয়াশিংটনের প্রতি ‘শ্রদ্ধাশীল’ হতে হবে।
গত মঙ্গলবারের (৪ নভেম্বর) নির্বাচনে প্রথম মুসলিম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জোহরান মামদানি। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অভিজাতদের একটি বড় অংশের তীব্র বিরোধিতাকে পাশ কাটিয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি।
তরুণ ও স্বল্প আয়ের ভোটারদের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হওয়া মামদানি শত বছরের মধ্যে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কম বয়সি মেয়র হচ্ছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ১০ মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে মাত্র ৩৪ বছর বয়সি রাজনীতিক মামদানির জয় দেশটির জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন বার্তা দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে বিশাল জয়ের পর কীভাবে নেতৃত্ব দেবেন সেদিকে মনোযোগ দিতে শুরু করেছেন জোহরান মামদানি। নির্বাচনের একদিন পরই বুধবার (৫ নভেম্বর) কুইন্সের ফ্লাশিং মিডোস করোনা পার্কে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাগ্রহণের জন্য একটি ‘ট্রানজিশন টিম’ ঘোষণা করেছেন তিনি।
সেই সঙ্গে মামদানি প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, নিউইয়র্কের জন্য তহবিল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন তিনি। মামদানির জয়ের ক্ষুব্ধ ট্রাম্প নিউইয়র্কের উন্নয়ন তহবিল বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি শহরে সেনা পাঠানোর হুমকির দেন ট্রাম্প।
নির্বাচনে জয়ের পরই ট্রাম্পের উদ্দেশে বেশ কড়া ভাষায় বক্তব্য দেন মামদানি। ফলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন হয়তো বেশ আগ্রহ নিয়েই মামদানির সঙ্গে রাজনৈতিক লড়াইয়ে জড়াবেন। নতুন মেয়রের যাত্রা জটিল করতে বহু পথ রয়েছে তার সামনে।
মামদানির এই বক্তব্যকে ‘বিপজ্জনক’ বলে বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প। বুধবার ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘তাকে ওয়াশিংটনের প্রতি একটু শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কারণ যদি সে তা না করে, তাহলে তার সফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এবং আমি তাকে সফল করতে চাই। আমি শহরটিকে সফল করতে চাই।’ এরপরই দ্রুত মন্তব্য বদলে বলেন, তিনি মামদানি নয়, নিউইয়র্ক সিটিকে সফল করতে চান।
এর আগে ট্রাম্প নতুন মেয়রকে ‘সাহায্য’ করার ইঙ্গিত দেন। যদিও তিনি তাকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে তীর্যক মন্তব্য করেন। মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্লোরিডার মিয়ামিতে আমেরিকান বিজনেস ফোরামে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘কমিউনিস্ট, মার্কসবাদী ও বিশ্বায়নবাদীদের সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই দেয়নি। এখন দেখা যাক নিউইয়র্কে একজন কমিউনিস্ট কীভাবে কাজ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখব তিনি কীভাবে কাজ করে। আমরা তাকে সাহায্য করব। আমরা চাই নিউইয়র্ক সফল হোক। আমরা তাকে কিছুটা সাহায্য করব, হয়তো।’
পিএ/এসএন