মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউমকে চুমু ও শরীরে হাত দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাজধানী মেক্সিকো সিটির ন্যাশনাল প্যালেসের কাছে রাস্তায় সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্লদিয়া শেনবাউমকে চুমু ও শরীরে হাত দেয়ার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তাতে দেখা যায়— শেনবাউম সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছে। এমন সময় এক ব্যক্তি আচমকা তার পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দ্রুত তাকে সরিয়ে দিচ্ছেন। এরপর পুলিশ ওই ব্যক্তিকে আটক করে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট শেনবাউম জানান, তিনি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করবেন। বলেন, ‘যদি আমি অভিযোগ না করি, তাহলে দেশের নারীরা কীভাবে নিরাপদ থাকবে? যদি রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গেই এমন হয়, তাহলে সাধারণ নারীদের সাথে আরো কী কী হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারী হিসেবে শুধু আমি নই, আমাদের দেশের অসংখ্য নারী প্রতিদিনই এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এবার একটা সীমা টানতেই হবে।’ অভিযুক্ত ব্যক্তি ভিড়ের মধ্যে আরও কয়েকজন নারীর সঙ্গেও এমন আচরণ করেছিলেন বলে জানান তিনি।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই ঘটনা মেক্সিকোর সমাজে গেঁথে থাকা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন। তাদের মতে, ঘটনাটি শুধু প্রেসিডেন্টে নিরাপত্তা নয়— দেশের নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকোতে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রায় ৭০ শতাংশ নারী জীবনে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে দেশটিতে নারী হত্যার ৯৮ শতাংশ মামলাই অমীমাংসিত থেকে যায়।
ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনা উঠলেও শেনবাউম জানিয়েছেন, ‘আমি সবসময় জনগণের পাশে থাকতে চাই, দূরে নয়’। ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন কয়েকদিন আগেই মিচোয়াকান রাজ্যের উরুয়াপান শহরে মেয়র কার্লোস মানজোকে স্থানীয় উৎসবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
গত নির্বাচনের আগে পর্যন্ত মেক্সিকোতে অন্তত ৩৫ জন প্রার্থী খুন হয়েছিলেন— যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচন হিসেবে ধরা হয়। দায়িত্ব নেয়ার পর শেনবাউম মাদকবিরোধী অভিযান ও ফেন্টানিল (এক ধরনের মাদক) পাচার দমনে কিছু সাফল্য পেলেও নারীর নিরাপত্তা এখনও তার সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।
আইকে/এসএন