সোশ্যাল মিডিয়ার ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ফিচার অবশেষে বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। বহু বছরের প্রতীক্ষার পর ফেসবুক তাদের মোবাইল অ্যাপে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে চমকে দেওয়া‘ডিসলাইক’ বাটন।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারকারীরা এমন একটি বিকল্পের দাবি জানিয়ে আসছিলেন, যা দিয়ে তারা কোনো মন্তব্য বা পোস্টে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন। এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল। যদিও ফিচারটি এখনো সবার জন্য উন্মুক্ত নয়, তবুও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
ফেসবুকের মোবাইল অ্যাপ আপডেটের পর অনেক ব্যবহারকারী নতুন ‘ডিসলাইক’ বাটনটি দেখতে পাচ্ছেন। এটি ব্যবহার করে সহজেই কোনো মন্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব।
শুরুতে ফেসবুক “Annoying” নামে একটি নিচের তীরচিহ্নযুক্ত বোতাম দিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছিল, তবে কিছু সময়ের মধ্যেই সেটির নাম পরিবর্তন করে পরিচিত শব্দ ‘Dislike’ রাখা হয়।
বর্তমানে ফিচারটি কেবল মোবাইল অ্যাপে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে; ওয়েব সংস্করণে এখনো দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া এটি সব ব্যবহারকারীর কাছে একযোগে পৌঁছায়নি। মেটা কর্তৃপক্ষও এখনো এই ফিচার নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, ফেসবুক ধীরে ধীরে সীমিত পরিসরে ফিচারটি চালু করে ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া যাচাই করছে, এরপর পর্যায়ক্রমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই ফেসবুক ব্যবহারকারীরা পোস্ট বা মন্তব্যে অসন্তুষ্টি, প্রতিবাদ বা অসম্মতি জানানোর জন্য একটি স্পষ্ট প্রতিক্রিয়ার অপশন চেয়ে আসছিলেন। এতদিন পর্যন্ত ‘লাইক’ বা অন্যান্য রিঅ্যাকশন বেশিরভাগই ইতিবাচক অনুভূতি প্রকাশ করত। কিন্তু সব কনটেন্টই যে সমর্থন বা আনন্দের দাবিদার, তা নয়।
ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে ফেসবুক এতদিন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সুযোগ দেয়নি। তবে এবার মনে হচ্ছে মেটা ব্যবহারকারীদের বাস্তব অনুভূতি প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে আগ্রহী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ডিসলাইক’ বাটনের আগমন ফেসবুকের যোগাযোগ পদ্ধতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। মন্তব্যে সরাসরি আপত্তি বা অসন্তুষ্টি জানানোর সুযোগ তৈরি হলে প্ল্যাটফর্মটি আরও স্বচ্ছ ও বাস্তবধর্মী হয়ে উঠবে।
যদিও ফিচারটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, তবুও এটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আইকে/এসএন