ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল দাস তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা বলতে বাইরে থেকে যেটা বুঝতাম, যে স্বপ্ন নিয়ে, যে উদ্যোগ নিয়ে আমরা পড়াশোনা করেছিলাম, ভর্তি হওয়ার পর হতাশ হয়েছি। প্রথমবর্ষ থেকেই মনে হয়েছে পড়াশোনা ছেড়ে দেই। বিশ্ববিদ্যালয় আসলে আমাদেরকে কিছু দিতে পারবে না। কিছু শেখাতে পারবে না। এই বিশ্ববিদ্যালয় কেবল শুধু দাস তৈরির একটা কারখানায় পরিণত হয়েছে।

আজ শুক্রবার ( ৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমির কবি শামসুল রাহমান সম্মেলন কক্ষে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের একজন ভিসি ছিলেন। তিনি তার আত্মীয়স্বজনকে প্রবেশ করানো জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি জন্য নতুন নতুন ডিপার্টমেন্ট খুলেছিলেন। গত ১৬ বছরের ইতিহাস যদি বলতে চাই, এই গল্প আসলে শেষ হবে না। আমাদের শিক্ষকেরা আমাদের থেকে আরো ভালো বলতে পারবে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমরা একটা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে একটা সম্ভাবনার জায়গায় আজ এসে পৌঁছেছি। এখন আমাদের চেষ্টা হবে এই সফলতাটাকে এই সময়টাকে ধারণ করে রাখা, টিকিয়ে রাখা, যাতে ভবিষ্যতে এইরকম দলীয়করণ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর না হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবর্ষে এসেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রবেশ করলেও খুব অল্প সময়েই হতাশ হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, যেখানে আসলে প্রশ্ন করা যায় না। সবসময় অনুগত থাকতে হবে। একটা চিন্তাকে, একটা রাজনীতিকেই মেনে নিতে হবে। ফলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের অ্যাক্টিভিজম করেছি, রাজনৈতিক কার্যক্রম করেছি। এই আন্দোলনের আগের কয়েকটা বছর পাঠচক্রের সাথেও জড়িত ছিলাম। কারণ আমাদের কাছে মনে হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় যা আমাদেরকে শেখাচ্ছে, এই চিন্তা যদি আমরা ধারণ করি লালন করি, নিজেদের মধ্যে আত্মস্থ করি, তাহলে একজন স্বাধীন মানুষ হিসেবে, মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে নাগরিক হিসেবে, আমরা দাঁড়াতে পারব না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের একটা কৌশল ছিল যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে। একটা অদৃশ্য বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা এই প্রক্রিয়াতেই ছিলাম এবং কখনো প্রকাশ্য, কখনো আধা গোপন, কখনো গোপনভাবে আমাদের এই কার্যক্রমগুলা পরিচালনা করা লেগেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই স্বাধীন পরিস্থিতি ছিল না। আপনি কী নিয়ে কথা বলবেন, আপনি এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাকে তার যেই পিছনে রাজনৈতিক ইতিহাস, বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস, সেগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করার কোনো সুযোগ ছিল না বিধায় আমাদের এই প্রক্রিয়ায় এগোতে হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভবিষ্যতে সবকিছু সমালোচনা, আলোচনা আমরা প্রকাশ্যে করতে পারব।

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা ভাঙ্গার কাজটা করেছি, আমরা গড়ার কাজটা কিন্তু করতে পারিনি। এখন আমাদের এই গড়ার কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষকদের, সমাজকর্মীদের, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের। যারা চিন্তাভাবনা করেন বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের সাথে যুক্ত আছেন, তাদের এই দায়িত্বটা নিতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সবসময় সামনে থাকবো। সে রাজনৈতিক লড়াই আমরা চালিয়ে যাব। আমরা ভাঙতে পারব খুব সহজেই কিন্তু গড়ার কাজের জন্য কিন্তু আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদেরই আমাদের প্রয়োজন। 

টিএম/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
থালাপতি বিজয়ের ‘জানা নায়াগন’ ৯ জানুয়ারি বড় পর্দায় মুক্তি Nov 07, 2025
img
চট্টগ্রামে অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকান উচ্ছেদ করল চসিক Nov 07, 2025
img
দল বাড়ছে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে Nov 07, 2025
img
ডেটিং অ্যাপ ‘হিংজ’-এর মাধ্যমে দুয়াজির সঙ্গে পরিচয় হয় মামদানির Nov 07, 2025
img
বিএনপি নেতা রিজভীর পা ধরে সালাম করা সেই পুলিশ ক্লোজড Nov 07, 2025
img
সাভারে ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল এক বৃদ্ধের Nov 07, 2025
img
ইয়ামাল ও ফোরনালসকে দলে ফিরিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা স্পেনের Nov 07, 2025
img
রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে : সাইফুল হক Nov 07, 2025
img
কিছু দল ভোটের আগে ওয়াদা দিলেও পরে তা রাখে না : জামায়াত আমির Nov 07, 2025
img
'একে৬৫' সিনেমাতে অজিত ও লোকেশের সম্ভাব্য যুগলবন্দি Nov 07, 2025
img
দিয়াগো জোতার শেষকৃত্যে না যাওয়ার কারণ জানালেন পর্তুগিজ মহাতারকা রোনালদো Nov 07, 2025
img
গণ-অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে : মঞ্জু Nov 07, 2025
img
আগামীর বাংলাদেশও তরুণদের হাত ধরেই গড়ে উঠবে : জামায়াত আমির Nov 07, 2025
img
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল পেরু Nov 07, 2025
img
ছয় ছবিতে একসঙ্গে কীর্তি সুরেশ, নতুন রূপে ফিরছেন পর্দায়! Nov 07, 2025
'দিল্লির বিরুদ্ধে কাজ করা মানে আমরা সঠিক পথে আছি' Nov 07, 2025
img
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করার সুযোগ নেই : জয়ন্ত কুমার Nov 07, 2025
img
ভিয়েতনামে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বাংলাদেশির Nov 07, 2025
img
হারিয়ে যাওয়া আসনগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে: রিতা Nov 07, 2025
ব্যর্থতার পর সাফল্যের গল্প লিখছেন ভ্লগার ফারাহ Nov 07, 2025