আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম

ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার এনেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে তা প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ টাইমস এর পাঠকদের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম তুলে ধরা হল:

আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ১

ফৌজদারি বিচারে সংস্কার

#গ্রেপ্তারকালে পুলিশের নেমপ্লেট ও পরিচয়পত্র থাকতে হবে, গ্রেপ্তারকৃতের নিকটজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানাতে থানা বাধ্য থাকবে, গ্রেপ্তারকৃত আহত বা অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, এসব আইনি সুরক্ষা বিচারক তদারকি করবেন।

#মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগের মতো ভুক্তভোগীকে মামলা করতে হবে না।

মিথ্যা অভিযোগকারীর সাজা বেড়েছে, সাজা দিচ্ছেন বিচারক নিজেই।

#সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

#সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিকে কার্যকরি করা হয়েছে।



আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ২

দেওয়ানি বিচারে সংস্কার: কমেছে ব্যয়, সময় ও ভোগান্তি

#আগে আরজি বা জবাব দাখিলের পর তা মৌখিকভাবে জবানবন্দি আকারে উপস্থাপন করতে হতো এবং বিচারককে সেটি পুনরায় লিখতে হতো। এখন আদালতে শুধু লিখিত জবানবন্দি দাখিল করলেই হয়। আগে সময় লাগত কয়েক বছরও। এখন মাত্র একদিনেই জবানবন্দি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

#এখন মূল মামলাতেই রায় বাস্তবায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; পৃথক জারি মামলা দায়েরের প্রয়োজন নেই। এতে সময় বাঁচছে কয়েক বছর। আদালতের রায় বা আদেশ এখন সরাসরি বাস্তবায়ন করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

#বারবার শুনানি মুলতুবি রেখে মামলা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ সীমিত করা হয়েছে। মিথ্যা মামলার জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি করা হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সমন জারি করায় সময় ও ব্যয় কমেছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ৩

মামলা নয়, মধ্যস্থতায় বিরোধ নিষ্পত্তি

পুরনো বিধান

সব ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সাধারণ মানুষকে সরাসরি আদালতে মামলা করতে হতো, যা ছিল সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও জটিল।

নতুন বিধান

পারিবারিক বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ সংক্রান্ত মামলা, বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধ, অগ্রক্রয় মামলা, নির্দিষ্ট কিছু বণ্টন মামলার ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে বিনা খরচে, কম সময় ও বিনা হয়রানিতে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে।




আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ৪

জনগণের দোরগোড়ায় লিগ্যাল এইড সেবা

আগের অবস্থা

#জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে মাত্র একজন বিচারক ছিলেন।

#মধ্যস্থতা চুক্তি আগে পক্ষগণ মানতে বাধ্য ছিল না।

সংস্কার কার্যক্রম

#জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে এখন বিচারক থাকছেন ৩ জন।

#লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সম্পাদিত মধ্যস্থতা চুক্তি চূড়ান্ত, বাধ্যতামূলক এবং এটি আদালতের ডিক্রির মতোই জারি করা যাবে।

#বিনামূল্যে আইনি পরামর্শের জন্য সহজে মনে রাখার মতো নতুন ফোন নম্বর ১৬৬৯৯।

আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ৫

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সংস্কার

#আগে বিয়ের প্রলোভনে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ মামলা হিসেবে দায়েরের কারণে ধর্ষণ মামলার বিচারে বিলম্ব হতো। এটি এখন প্রতারণামূলক যৌনকর্ম হিসেবে ভিন্ন অপরাধ। ফলে (জোরপূর্বক) ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত হচ্ছে।

#ধর্ষণ মামলার বিচার ৯০ দিনের মধ্যে সমাপ্ত হচ্ছে (আগে ছিল ১৮০ দিন)। নির্দিষ্ট সময়ে তদন্ত ও বিচার শেষ না করলে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়েছে।

#ছেলে শিশুর বলাৎকার এখন মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ। শিশু ধর্ষণ প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল।

#এ ছাড়া অভিযোগকারী, সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে, অনলাইনে সাক্ষ্য প্রদানের সুযোগ রয়েছে, অপরাধের সাজার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং মিথ্যা মামলার বাদীর বিরুদ্ধে বিচারক নিজ উদ্যোগে বিচার করতে পারবেন।



আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ৬

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ

পূর্বের অবস্থা

#পূর্বে উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন বা পদ্ধতি ছিল না। রাজনৈতিক প্রভাবে ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচারপতি নিয়োগ হতো। ফলে বিচারপতিদের যোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতো।

সংস্কার কার্যক্রম

#বর্তমানে জীবনবৃত্তান্ত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের বিধান করা হয়েছে। সর্বশেষ ২৫ জন বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছেন এই প্রক্রিয়ায়।


আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম - ৭

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংস্কার

#গুম এখন মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।

#স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার স্বার্থে বিচারকার্য সরাসরি সম্প্রচার।

#দেশি আইনজীবীর পাশাপাশি বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ।

#অন্তর্বর্তীকালীন আপিলের সুযোগ।

#আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগপত্র দাখিল হলে নির্বাচনে অযোগ্য।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইট পরিচালনায় ৩ পাইলটের পরিচয় Dec 25, 2025
img
স্বদেশে ফিরছেন তারেক রহমান, কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বিমানবন্দর Dec 25, 2025
img
নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ Dec 25, 2025
img
ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের মানচিত্রে সংযুক্ত করতে চায় বেইজিং Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় আসার পথে প্রাণ গেল কৃষকদল নেতার Dec 25, 2025
img
তাসকিনদের ৬ উইকেটে হারিয়ে প্লে-অফে মুস্তাফিজের দল Dec 25, 2025
img
নরসিংদী-৩ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন মনজুর এলাহী Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের সঙ্গে দেশে ফিরছে ‘জেবু’ও Dec 25, 2025
img
বাংলাদেশি কিশোরীর টানে চাঁদপুর এসে পুলিশ হেফাজতে চীনা নাগরিক Dec 25, 2025
img
দেশে ফেরার আগে লন্ডনের বাসার সামনে সপরিবারে তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
সিলেটে এক ঘণ্টা যাত্রা বিরতি দিবেন তারেক রহমান, কড়া নিরাপত্তা Dec 25, 2025
img
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 25, 2025
img

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

সমঝোতা হলেও এনসিপি প্রার্থীরা শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করবেন Dec 25, 2025
img
জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মান্নার ঋণ পুনঃতফসিল বাতিল করলো ইসলামী ব্যাংক Dec 25, 2025
img

হাদি হত্যা

ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালকের দায় স্বীকার Dec 25, 2025
img
নতুন দায়িত্ব পেলেন আলী রীয়াজ Dec 25, 2025
img
দেশের পথে তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০ কিলোমিটারে তীব্র যানজট Dec 25, 2025
img
যশোর-৬ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন হারালেন শ্রাবণ Dec 25, 2025
img
আজ শুভ বড়দিন Dec 25, 2025