ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের সুয়াদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভোর সাড়ে ৬টা থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অবরোধের কারণে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ডাকা ঢাকা লকডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করলে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এতে করে মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়ে আছে। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে খুলনামুখী সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুয়াদী এলাকার মূল সড়কের ওপর এখনো গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। অবরোধকারীরা দা, লাঠিসহ অবস্থান নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি কাজ করছে র্যাবের সদস্যরা। তবে তারা কোনো প্রকার বল প্রয়োগ করছে না। বুঝিয়ে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
অবরোধের কারণে যাত্রীদের মধ্যে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। খুলনাগামী সেতু ডিলাক্স বাসের যাত্রী মো. মনিরুজ্জামান দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা থেকে ভোরে বের হয়েছিলাম অফিসের কাজে, কিন্তু সুয়াদীতে এসে গাড়ি থেমে গেছে। প্রায় চল্লিশ মিনিট হয়ে গেছে, কেউ জানে না সামনে কী অবস্থা। এভাবে ভোগান্তি হবে জানলে অন্য ব্যবস্থা করতাম।
একই বাসের আরেক যাত্রী সাইফুল ইসলাম সজল বলেন, রাস্তায় বের হয়েই বিপাকে পড়েছি। মাঝপথে আগুন আর গাছ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। একটু সামনে যেতেই আবার আটকে যেতে হচ্ছে। খুলনায় কখন পৌঁছাতে পারব, কিছুই বলা যাচ্ছে না।
খুলনাগামী ওয়েলকাম এক্সপ্রেসে বাসের যাত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, একটা ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে যাচ্ছি। বাচ্চা কান্নাকাটি করছে। খুব কষ্টে আছি। তাড়াতাড়ি ছাড়লে বাড়ি যেতে পারতাম।
নড়াইলগামী প্লাস্টিক পণ্যবাহী ট্রাকচালক সুমন শেখ বলেন, ট্রাকে স্যানিটারির মালামাল রয়েছে। আমার দেরি হলেও সমস্যা নাই। তবে আটকা পড়ে আছি প্রায় তিন ঘণ্টা। আমার আরেকটা ট্রিপ ছিল নড়াইল থেকে। জানি না কখন নড়াইল যেতে পারব।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, আমাদের টিম ঘটনাস্থলে আছে। চেষ্টা চলছে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার। তবে অবরোধকারীরা অবরোধ সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে সরিয়ে নেয়। আমরা চলে গেলে বা আমাদের সদস্য কমে গেলে ফের রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের সাথে জেলা পুলিশ ও র্যাব কাজ করছে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।
এমকে/এসএন