আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি চাইতে পারে জার্মানি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন আশ্রয়নীতি অনুযায়ী, ইইউতে আসা আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসীদের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ন্যায্যভাবে বন্টনের কথা রয়েছে।

অর্থাৎ প্রতিটি দেশকে আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণ করতে হবে, না হলে প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে হবে। কিন্তু অন্তত আগামী বছর পর্যন্ত আশ্রয়প্রার্থী গ্রহণের এই বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি চাইতে পারে জার্মানি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জার্মান বার্তাসংস্থা ডিপিএ। এতে বলা হয়েছে, দেশটি ইতোমধ্যে বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। 

গত সেপ্টেম্বরে জার্মান পার্লামেন্টে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জার্মানিতে ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে শরণার্থীর সংখ্যা অন্তত ৫০ হাজার কমেছে। ২০২৪ সালের শেষে শরণার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৫ লাখ ৫০ হাজার, সংখ্যাটি কমে এখন হয়েছে ৩৫ লাখ।

শরণার্থীর এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছে জার্মানিতে বিভিন্ন মর্যাদায় বসবাসের অনুমতি পাওয়া আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীরা। নতুন আসা আশ্রয়প্রার্থী থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন ধরে যারা দেশটিতে আছেন, তাদেরকেও রাখা হয়েছে এই তালিকায়। ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

ডিপিএ-এর হাতে আসা নথিটি মূলত ইইউর অভিবাসন বিষয়ক কমিশনার মাগনুস ব্রুনারের তথাকথিত ‘সংহতি পুল’ সম্পর্কিত বিশ্লেষণ। এই নথিতে ইঙ্গিত করা হয়েছে, জার্মানি যুক্তি দেখাতে পারে যে তারা ইতোমধ্যেই বিপুল সংখ্যক আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, যাদের দায়িত্ব অন্য ইইউ রাষ্ট্রগুলোর হওয়া উচিত ছিল।

ইইউর আশ্রয় সংস্কারের অংশ হিসেবে গঠিত এই পুলের লক্ষ্য হলো অভিবাসন ইস্যুতে তীব্র চাপের মুখে থাকা বা সম্মুখসারির দেশগুলোর ওপর থেকে চাপ কমিয়ে আনা।

এদিকে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন অভিবাসন ও আশ্রয় চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর অভিবাসন চাপ মোকাবিলায় বিশেষ সহায়তা পাবে ভূমধ্যসাগরীয় দেশ গ্রিস, সাইপ্রাস, স্পেন ও ইতালি। মঙ্গলবার ইউরোপীয় কমিশন সংহতি ব্যবস্থার মূল দাবিদার হিসেবে এ চারটি দেশের নাম ঘোষণা করেছে।

সামনের বছরগুলোতে বিপুল সংখ্যক আগমন বা গ্রহণ ব্যবস্থা নিয়ে চাপের মুখে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডস।

সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রথমবারের মতো উত্থাপন করা অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণটিকে ইইউর নতুন আশ্রয়নীতি বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দায়িত্বগুলো আরও ন্যায্যভাবে বণ্টন ও ভারসাম্যপূর্ণ করা।

এখন ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো এসব বিষয় বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। 

আরপি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
লেভানদোস্কির উত্তরসূরি হিসেবে বার্সেলোনার নজরে হ্যারি কেন Nov 13, 2025
img
সাভারে আওয়ামী লীগের ৪২ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার Nov 13, 2025
img
নেপালের বিপক্ষে একাদশে হামজা, বেঞ্চে শমিত শোম Nov 13, 2025
img
ফ্যাসিবাদের ফিরে আসা ঠেকাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : দুলু Nov 13, 2025
img
চুক্তি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে ২৬ মালিক - কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের পাঁচ মামলা Nov 13, 2025
img
স্ত্রীর অবদানেই সাফল্যের শিখরে, স্বীকার করলেন জিৎ Nov 13, 2025
img
বিগত সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে : আবুল কালাম Nov 13, 2025
img
সৌদি আরবে ভারী বৃষ্টি, মক্কায় ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি Nov 13, 2025
img
প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান সেনাপ্রধানকে আজীবন দায়মুক্তি দিল পাকিস্তানের সংসদ Nov 13, 2025
img
নারী ক্রিকেটারদের হয়রানির প্রতিরোধে ফেডারেশনগুলোকে এনএসসি’র বার্তা Nov 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টা সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ভাষণকে স্বাগত জানাল এবি পার্টি Nov 13, 2025
img
সুভাষ সিংহ রায় ও তার স্ত্রীর ৯ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ Nov 13, 2025
img
সাব-কন্ট্রাক্টে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রণোদনার ঘোষণা সরকারের Nov 13, 2025
img
মেরুন পোশাকে রাজকীয় আবহে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম Nov 13, 2025
img
নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Nov 13, 2025
img
ভারতকে সহযোগিতার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের, অসম্মতি ভারতের Nov 13, 2025
img
আ. লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে টাঙানো হলো ছাত্রশিবিরের ব্যানার Nov 13, 2025
img
ব্রাজিল দলে ভিনিসিয়ুসকে নিয়ে নতুন পরিকল্পনা আনচেলত্তির Nov 13, 2025
img
ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচিতে নেমে আটক ছাত্রলীগ নেতা Nov 13, 2025
img
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা তিতাস আটক Nov 13, 2025