মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান এখন দশকের অন্যতম এক ভয়াবহ সংকটের মুখে। টানা পাঁচ বছর ধরে শুষ্কতা এবং রেকর্ড তাপমাত্রার কারণে দেশটির রাজধানী তেহরানসহ অর্ধেকেরও বেশি প্রদেশে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে রাজধানী তেহরানের এক কোটি বাসিন্দার জন্য সরকার পর্যায়ক্রমে পানির সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মহাবিপদ থেকে বাঁচতে দেশটির উত্তরাঞ্চলে মসজিদগুলোতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানী তেহরানের ইমামজাদে সালেহ মসজিদে শত শত নারী-পুরুষ ইসলামি রীতিনীতির অনুসারে বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য জড়ো হন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর তেহরানে বৃষ্টিপাত শত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। তীব্র পানি সংকট মোকাবিলায় তেহরানের এক কোটি বাসিন্দার জন্য পানির সরবরাহ পর্যায়ক্রমে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ জানায়, তেহরানের প্রধান খাবার পানির উৎস দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যেতে পারে। এদিকে শহরটির পানি সরবরাহকারী সংস্থার পরিচালক জানিয়েছেন, প্রধান জলাধার আমির কাবির বাঁধে বর্তমানে মাত্র এক কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি রয়েছে, যা তেহরানকে আর মাত্র ১৪ দিন পানি সরবরাহ করতে পারবে।
কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, যদি উল্লেখযোগ্যভাবে পানি ব্যবহারে কাটছাঁট না করা হয়, তাহলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজধানীর কিছু অংশ ‘ডে জিরো’র (বাড়ির কল বন্ধ, ট্যাংকারের মাধ্যমে সরবরাহ) মুখোমুখি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধু একটি পানি সংকট নয়, বরং পানির দেউলিয়াত্ব-এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে অতিরিক্ত পানি ব্যবহারের কারণে ক্ষয়ক্ষতি আর পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। পানির তীব্র সংকটে থাকা খুজেস্তান ও সিস্তান-বেলুচিস্তানসহ একাধিক প্রদেশে গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
এবি/টিকে