আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে, বিএনপি-জামায়াতের মনোনয়ন বঞ্চিত হেভিওয়েট প্রার্থীদের মনোনয়ন দেবে এনসিপি। ইতোমধ্যেই এমন একাধিক প্রার্থী এনসিপি'র সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন দলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেসব সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ্যে না আনলেও এনসিপির নির্বাচনি পরিচালনা সমন্বয় কমিটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় চমক দেখাবে তারা। সমীকরণ মেলাতে পারলে সরকার দল কিংবা শক্তিশালী বিরোধী দলেই জায়গা হবে এনসিপির, এমন দাবিও করছেন তারা।
দূর-দূরান্ত থেকে মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ করতে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিড় আগ্রহী প্রার্থীদের। তারা চায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাপলা কলি প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। এনসিপির হিসাবে, এখন পর্যন্ত ১১০০ এর বেশি ফর্ম বিতরণ করেছেন তারা।
তবে, শুধু এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এমন প্রার্থীই নয়, বরং সমাজের ভিন্ন ভিন্ন পেশার ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় প্রার্থীদের এনসিপির ভোটের ট্রেনে সওয়ার করাতে চায় তারা। যেখানে প্রার্থী হবেন রিকশাচালক, কৃষক থেকে শুরু করে অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও সাবেক আমলা।
এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘অনেক পেশার মানুষ যারা আগে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন নি বা চিন্তা করেন নি, রাজনীতিতে তাদের জায়গা হবে তারা আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা এসেছেন, আইনজীবী এসেছেন, চিকিৎসক এসেছেন, প্রকৌশলী এসেছেন, তারা চাচ্ছেন প্রক্রিয়াটা যুক্ত হতে।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘একইসঙ্গে আবার এলাকায় মানুষের সঙ্গে জনসম্পৃক্ততা আছে, মানুষের জন্য এতদিন ধরে কাজ করেছে, আমরা তাদের অ্যাসেসমেন্ট করে দেখতে পাই যে তাদের আগ্রহ আছে। এবং তাদের এলাকায় ফাইট দেয়ার বা জিতে আসার সম্ভাবনা আছে। সে সম্ভবনার ভিত্তিতে আমরা আমাদের যে আসনগুলো সে আসনে আমরা প্রার্থী যাচাই-বাছাই করে ঠিক করবো।’
এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইতিমধ্যে বিএনপি-জামায়াতের মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ, এমন নেতাদের দলে প্রার্থী করে রণকৌশল সাজাতে চান তার। বিপরীত দিক থেকে বিস্ময়কর সাড়া মেলার দাবিও করছেন দলটির নেতারা।
সারজিস বলেন, ‘যখন আসনগুলোতে মনোনয়নটি কনফার্ম করা হবে তখন বিভিন্ন বড় বড় রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ে যে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে তারা এনসিপির মনোনয়নে সেখানে আগামী নির্বাচন করবে।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গত ১৫ বছরে তাদের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, হাঁটুতে গুলি খেয়েছে, পা কেটে ফেলেছে তাদেরকে তো মূল্যায়ন করতে হবে। বিএনপি তাদের মূল্যায়ন করে নাই। জামায়াতও অনেক ক্ষেত্রে মূল্যায়ন থেকে পিছিয়ে আছে। সে কারণে এ মানুষগুলোকে উঠিয়ে নিয়ে আসা আমাদের দায়িত্ব। দায়িত্বটা আমরা আদায় করছি।’
২৪ এর অভ্যুত্থানের দুটি পরিচিত মুখ, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া এবং মাহফুজ আলম। এনসিপিতেই যোগ দিয়ে ভোটের মাঠে তারা লড়বেন, এমন প্রত্যাশাই দলটির।
এ বিষয়ে সারজিস বলেন, ‘তারা যখন সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন তাদের জন্য বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের দ্বার যেমন উন্মুক্ত, তাদের জন্য এনসিপির দ্বারও উন্মুক্ত। এবং আমাদের সহযোদ্ধা হিসেবে তাদের প্রতি আমাদের যে আন্তরিকতার জায়গা সেটা সবসময় বেশি থাকবে।’
তবে, ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্য যেকোনো রাজনৈতিক দল থেকে এ দুই উপদেষ্টা নির্বাচনে অংশ নিলে এনসিপি সেটা ইতিবাচকভাবে দেখবে এমন কথা জানান সারজিস আলম।
ইএ/এসএন