সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের হোয়াইট হাউস সফরের সময় এসব চুক্তি সম্পন্ন হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেন বলে সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশ সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করে এবং তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেওয়ার যৌথ প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করে। তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির উপায় এবং পারস্পরিক আগ্রহের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা করে।
এছাড়া আরও কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হলো-
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব।
২. অসামরিক পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা সংক্রান্ত আলোচনার সমাপ্তি বিষয়ে যৌথ বিবৃতি।
৩. ইউরেনিয়াম, খনিজ, স্থায়ী চুম্বক এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর সাপ্লাই চেইন নিরাপত্তায় অংশীদারিত্বের কৌশলগত কাঠামো।
৪. সৌদি বিনিয়োগ দ্রুততর করার প্রক্রিয়া সহজীকরণ চুক্তি।
৫. আর্থিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের ব্যবস্থা।
৬. আর্থিক বাজার কর্তৃপক্ষ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত ব্যবস্থা।
৭. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক। ও
৮. যানবাহন নিরাপত্তা মানদণ্ড সম্পর্কিত চিঠিপত্র।
বৈঠকটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন এবং তাতে সৌদি ও মার্কিন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসপিএ জানায়, এই চুক্তি নিশ্চিত করে যে, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সক্ষম অংশীদার, যারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ এবং হুমকির মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
এটি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা সমন্বয়কে গভীর করে, প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রস্তুতি বৃদ্ধি করে এবং দুই দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার উন্নয়ন ও সমন্বয়কে সহায়তা করে।
সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান বলেন, এই কৌশলগত চুক্তি “উভয় দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব গভীর করা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা অগ্রসর করার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।”
যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনত বান্দার বলেন, এই “চুক্তিগুলো দুই দেশে বিনিয়োগ বাড়াবে, সৌদি ও মার্কিন নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি আরও দৃঢ় করবে।”
এর আগে ওভাল অফিসে ট্রাম্প ক্রাউন প্রিন্সকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান, যেখানে সৌদি নেতা ঘোষণা করেন যে, সৌদি আরবের যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ এই বছরের শুরুর দিকে ঘোষিত ৬০০ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করা হবে।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বলেন, “আজ আমাদের ইতিহাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়,” তিনি দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, “ভবিষ্যতের জন্য আমরা বহু বিষয়ে কাজ করছি,” এবং যোগ করেন যে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতে বিশ্বাস করে।
ক্রাউন প্রিন্স আরও বলেন, এই চুক্তিগুলো উভয় দেশের জন্যই লাভজনক।
ইএ/এসএন