পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি।
তিনি বলেন, ‘যারা পলাতক আছেন বা যারা দেশের বাইরে আছেন, তারা জানেন যে তাদেরকে কিছু করা যাবে না। কিন্তু আইনের কবজাতে যারা আছেন; যেমন সালমান এফ রহমান, জুনায়েদ আহমেদ পলক, ডা. দীপু মনিসহ অন্যান্যদের যদি সেই জামায়াত নেতাদের মতো করে ফাঁসিতে ঝুলানো যায়, তাহলে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা কান্নার রোল পড়ে যাবে। তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে, সবাই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পালাতে থাকবে।’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওবার্তায় রনি বলেন, জুলুম, অত্যাচারসহ যে বিরূপ পরিস্থিতি জামায়াত মোকাবেলা করতে পেরেছে, তার ১০০ ভাগের একভাগও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পক্ষে এই মুহূর্তে মোকাবেলা করা সম্ভব না। এর কারণ হলো, প্রায় ১৫ বছরের একটি অভ্যাস। আওয়ামী লীগ ধমক দিতে অভ্যস্ত। ব্যবসা-বাণিজ্য ছিনিয়ে নিতে অভ্যস্ত।
অভাব কাকে বলে, অভিযোগ কাকে বলে, সেই জিনিসগুলো তারা দেখেনি।’
‘ফলে এই যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, এর ফলে এখন তাদের সবার মধ্যে রীতিমতো হাহাকার তৈরি হয়েছে। দেশে বাড়িঘর রেখে যারা পালিয়ে গেছেন, তাতে দেশের রাজনীতির যে ইতিহাস, তাতে করে একবার যদি কেউ পালিয়ে যান, দ্বিতীয়বার সে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে পারে না। এমনকি দেখুন, বিএনপির যে সকল নেতা বা নেত্রী গত ১৫ বছরে পালিয়ে ছিলেন, তারা কিন্তু রাজনীতিতে নেই। এবং দুই একজন যারা ফেরত এসেছেন তারা কিন্তু মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরতে পারছেন না।’
রনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতি তারাই করছেন, যারা বাংলাদেশে ছিলেন। যারা জেল জুলুম অত্যাচার ভোগ করেছেন, তারাই রাজনীতিতে আছেন। অন্যদিকে জামায়াতের লোকগুলো পালিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তারা দেশের বাইরে যাননি। ফলে বাংলাদেশের যে আবহাওয়া, প্রকৃতি এবং পরিবেশ তাদের মুখস্থ। এবং তাদের যে অভিজ্ঞতা সেটা বিএনপির চেয়ে বেশি। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে রাজনৈতিক মামলার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র যে বিচারগুলো মার্শাল কোর্টে যারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। এর বাইরে এই আইসিটি কোর্টে কেবলইমাত্র শেখ হাসিনার জামানাতে তাও তিনি সফল হয়েছেন দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার কারণে। অন্যথায় রাজনীতিটা যদি স্বাভাবিক গতিতে চলতো তাহলে সেই মামলাগুলো থেকে জামায়াতের সব নেতারা মুক্তি লাভ করতেন। আইসিটি মামলায় জামায়াত, বিএনপি নেতাদের যে ফাঁসি হয়েছে, এটার একমাত্র কারণ হলো শেখ হাসিনা একটানা ক্ষমতাগুলো পরিচালনা করতে পেরেছেন।’
কেএন/টিকে