ফুলের মতো দেখতে ফুলকপি পুষ্টিগুণেও অনন্য

ফুলকপি অতিপরিচিত একটি শীতকালীন মৌসুমি সবজি। দেখতে ফুলের মতো সুন্দর বলেই সবজিটির এই নামকরণ করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণের কারণেই পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এই সবজিটি।

নিয়মিত ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে। পাশাপাশি শাকসবজি হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি সমৃদ্ধ উৎস। তাই খাবার তালিকা থেকে কখনোই ফলমূল ও শাকসবজি বাদ দেয়া উচিত নয়।

এই শীতে সবজি প্রেমীদের পছন্দ তালিকার শীর্ষে থাকা উচিত ফুলকপি। কারণ, ফুলকপিতে রয়েছে- ফাইটোনিট্রিয়েন্টস, ফাইবার, ভিটামিন-কে ও ভিটামিন-সি, যা দেহে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমন্বয় হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও এতে সালফার ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা বিভিন্ন রোগের অনুঘটক ‘ফ্রি র‌্যাডিকেল’ সমূহকে নিরপেক্ষ করে।

চলুন জেনে নিই, কেন এই শীতে অবশ্যই ফুলকপি খেতে হবে-

ক্রুশিয়াস জাতীয় উদ্ভিজ্জ হিসাবে ফুলকপিতে প্রাকৃতিকভাবে ফাইবার ও ভিটামিন-বি এর পরিমাণ বেশি। এছাড়াও এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সরবরাহ করে, যা বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে আমাদের দেহকে রক্ষা করতে পারে। এতে থাকা ফাইবার ওজন হ্রাস এবং হজমশক্তি বাড়িয়ে তুলতে কার্যকর। এতে কোলাইন রয়েছে, যা শেখার শক্তি, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এবং অন্যান্য অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয়।

গবেষণায় দেখা গেছে যে, ডায়েটারি ফাইবার বা খাদ্য আঁশ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ফলস্বরূপ, ফুলকপি প্রদাহজনিত সংক্রমণ যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও স্থূলতার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়ক।



উচ্চমাত্রার ফাইবার গ্রহণের ফলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস হয়, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত হয় এবং এটি অতিরিক্ত ওজন ওয়ালা লোকদেরকে ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে।

ফুলকপি হাড়কে সুস্থ রাখার জন্য পরিচিত। কারণ এতে ভিটামিন-সি রয়েছে, যা কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন-কে হাড়ের ক্ষয় রোধে সহায়তা করে।

এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়তা করে। ফুলকপি কার্সিনোজেনের ফলে সংগঠিত ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম। এতে গ্লুকোসিনোলেটস নামে একটি অভিনব নামের উপাদান রয়েছে। যা কাঁচা ফুলকপিকে একটি স্বতন্ত্র গন্ধ দেয় এবং এই উপাদান সাধারণ কার্সিনোজেনের আক্রমণ থেকে ফুসফুস এবং পেটকে রক্ষা করতে কার্যকর।

এই কম শর্করা সমৃদ্ধ সবজিটি রুটি, পিজ্জা এবং এ রকম আরও অনেক অতিমাত্রায় শর্করা সমৃদ্ধ খাবারের বদলে খাওয়া যেতে পারে। ফলে আপনার শর্করা গ্রহণের পরিমাণ কমে যাবে আর আপনি আরও বেশি হালকা এবং সুস্থ বোধ করবেন।


অনেক ধরনের তরকারি এই সবজি দিয়ে তৈরি করা যায়। ফুলকপি ভাজি, ফুলকপির বড়া, আলু-ফুলকপির তরকারি, ফুলকপি-মাছ প্রভৃতি ফুলকপি সমৃদ্ধ রন্ধনশৈলী আমাদের সবার পরিচিত। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: