টিপাফল এক ধরনের টক মিষ্টি স্বাদের দেশীয় অপ্রচলিত ফল। এই ফলটি দেখতে আঙুর ফলের মতো। স্থান ভেদে বিভিন্ন এলাকায় একেক নামে ডাকা হয়। ঢাকা ও নোয়াখালীতে এটি ‘টিপফল' নামেই পরিচিতি। নরসিংদীতে ডাকা হয় ‘পেলাগোটা' বা ‘পলাগোটা' নামে। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দারাও প্রায় কাছাকাছি নামে, ‘প্যালাগোডা' ডাকে। কিশোরগঞ্জ এলাকায় এর নাম ‘টরফই'।
এছাড়াও টিপটিপানি, লুকলুকি, প্যালা, পায়েলা, ঝিটকি, টরফই, পানিয়ালা, পানি আমলা, পাইন্না, পাইন্ন্যাগুলা, বেহুই ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। ফলটির ইংরেজি নাম Indian plum বা coffee plum এবং বৈজ্ঞানিক নাম Flacourtia jangomas বা Flacourtia cataphracta। এটি নিচুভূমি এবং পাহাড়ি এলাকার বৃষ্টিবহুল অঞ্চলের ‘উইলো’ পরিবারভুক্ত বৃক্ষ।
আমাদের দেশে পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ছাড়াও চট্টগ্রামের পটিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশের পাহাড়ি ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে এ ফলের গাছ জন্মায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন হাটবাজারে এই ফল সচরাচর বিক্রি হয়ে থাকে। এক সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর দেখা মিললেও সংরক্ষণের অভাবে ফলটি হারিয়ে যাচ্ছে।
পাকলে এই ফলের রং লালচে বেগুনী হয়ে যায়। এর অভ্যন্তরভাগে শাঁসের রং গোলাপি সাদা বা হালকা বাদামী। খোসাসহ পুরো ফল খাওয়া যায়। তবে ফলটির পূর্ণ স্বাদ পেতে খাওয়ার আগে টিপ মারতেই হবে। পাকা ফল হাতের তালুতে নিয়ে লাড্ডুর মতো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বা টিপে যত নরম করে খাওয়া যায় ততই সুস্বাদু ও মিষ্টি লাগে। গাছ থেকে যতই পাকা ফল পেড়ে খাওয়া হোক তা কষ্টে লাগবে।
পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, টিপাফলের শতকরা ৬০ ভাগ আয়রন। সালফার, ক্যালসিয়াম,ফসফেট ছাড়াও ১০ ভাগ রয়েছে ভিটামিন-সি। অন্যান্য উপাদানও রয়েছে সমভাবে।
বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, ওষধি ফল হিসেবে টিপাফলের বেশ কদর রয়েছে। এ ফল খেলে হজমশক্তি ও লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। হৃদরোগীদের জন্য এটি উপকারী ভেষজ ওষুধের কাজ করে। তাছাড়া এর পাতা ও ফল ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধক।
চলুন জেনে নিই, টিপাফলের ওষধিগুণ সম্পর্কে -
টাইমস/জিএস