সেলিনা জেটলির চোদ্দ বছরের সংসারে ভাঙন। স্বামী পিটার হগের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার পাশাপাশি লাগাতার অস্বাভাবিক যৌনচারেরও অভিযোগ তুলেছেন অভিনেত্রী। ডিভোর্সনামায় পরপুরুষের সঙ্গে শুতে বাধ্য করা থেকে বছরের পর বছর ধরে শারীরিক নিগ্রহ, অস্বাভাবিক যৌনতায় লিপ্ত হওয়া, এমনকী মোটা অঙ্কের পণ দিতে বাধ্য করার মতো একাধিক বিস্ফোরক ঘটনার বর্ণনা উল্লেখ করেছেন সেলিনা।
বছরখানেক ধরে সিনেপর্দা, লাইমলাইটের অন্তরালে থাকলেও একসময়কার ‘বোল্ড’ বলিউড নায়িকাকে নিয়ে চর্চার অন্ত নেই! প্রেমের টানে অস্ট্রেলিয়া নিবাসী হোটেল ব্যবসায়ী পিটার হগের সঙ্গে ২০১১ সালে সংসার পেতেছিলেন সেলিনা। তিন সন্তানও রয়েছে তাঁদের। তবে সেলিনার অভিযোগ, “স্বামী হাতে লাগাতার মারধরের শিকার তিনি।” শুধু তাই নয়, অভিযোগপত্রে তাঁর উল্লেখ করা গার্হস্থ্য হিংসার বর্ণনা জানলে গা শিউড়ে উঠতে বাধ্য! সেলিনার দাবি, বিয়ের ঠিক পর থেকেই স্বামীর আসল রূপ দেখতে পান তিনি।

অভিনেত্রী জানান, “পিটার আমাকে পণের জন্য বাধ্য করত। বলত, সমস্ত ভারতীয় জামাইদের দেখেছি মোটা পণ, দামি পোশাক, গয়না পেতে। ফলত আমার বাড়ি থেকে পিটারকে ৭ লক্ষ টাকার গয়না-কাফলিঙ্ক উপহার দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ইতালিতে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে যখন ঋতুস্রাবের মরণকামড়সম যন্ত্রণায় ভুগছি, পিটারকে বলেছিলাম, ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। ও রেগে গিয়ে আমার উপর চেঁচিয়ে ওয়াইন গ্লাস ছুঁড়ে ভেঙে দেয়। যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন সপ্তাহের মাথায় আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বলেছিল- আমার জীবন থেকে বেরিয়ে যাও। সেসময়ে আমি সন্তানদের স্তন্যপান করাচ্ছিলাম। এক প্রতিবেশী এসে উদ্ধার করেন আমাকে।” এখানেই শেষ নয়!
সেলিনার অভিযোগ, “২০১২ সালের দিল্লির ধর্ষণকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে পিটার আমাকে হুমকি দিয়েছিল, যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেব! ২০১৪-১৫ সাল থেকে আমাকে ওর অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মীদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করত। বলত, এতে অফিসে ওর পদমর্যাদা বাড়বে। রাত হলেই আমাকে উপরের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে চলত অকথ্য যৌনঅত্যাচার। বিকৃত যৌনচারে অভ্যস্ত ছিল পিটার। নিত্যদিন পায়ুকামে (অ্যানাল সেক্স) বাধ্য করত আমাকে। স্ত্রী হিসেবে আমার প্রতি মানসিক টান তো দূরঅস্ত, আমাকে যৌনপুতুলে পরিণত করেছিল স্বামী পিটার হগ। সন্তানদের সামনে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করত।” এমনকী নগ্ন ছবি তুলে রেখে বিভিন্ন সময়ে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগও তুলেছেন সেলিনা জেটলি।
বলিউড অভিনেত্রীর অভিযোগ, পিটার অত্যন্ত নিষ্ঠুর। সবসময়ে তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তিন সন্তান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে সমস্তরকম যোগাযোগ ছিন্ন করতে বাধ্য করেছেন পিটার। মৌখিকভাবে যাতে সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, আদালতের কাছে সেই আবেদনও জানিয়েছেন অভিনেত্রী। পাশাপাশি খোরপোশ হিসেবে পিটারের থেকে ৫০ কোটি টাকা চেয়েছেন সেলিনা জেটলি। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, নায়িকার আবেদনের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মুম্বই আদালতের তরফে অস্ট্রেলিয়া নিবাসী পিটার হগকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলার আগামী শুনানি ১২ ডিসেম্বর।
আইকে/টিএ