আবু সাঈদ হত্যা

৩০ আসামির বিরুদ্ধে ১৮তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ১৮তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্য পেশ হবে। এদিন দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে।

গত ২৪ নভেম্বর এ মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তার জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল। তবে সাক্ষী হাজির হলেও বিশেষ কারণে নেওয়া হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সাক্ষ্যগ্রহণ হবে।

এ মামলায় ৩০ আসামির ২৬ জনই পলাতক। গ্রেপ্তাররা হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।

২৩ নভেম্বর ১৬তম দিনের মতো জবানবন্দি দেন সাজু রায়। তিনি ১৮ নম্বর সাক্ষী। আবু সাঈদকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন সাজু। এছাড়া মৃত ঘোষণার পর পথ থেকে তার লাশটি পুলিশ কেড়ে নিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন। পরে তাকে জেরা করেন পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও গ্রেপ্তারদের আইনজীবীরা।

এর আগে, ১৮ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন শিক্ষার্থী শান-এ রওনক বসুনিয়া। তিনিও বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। গত ১৬ নভেম্বর জবানবন্দি দিয়েছেন মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক। ১৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে তিনি গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের পুরো বর্ণনা তুলে ধরেন। ১৩ নভেম্বর প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দেন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক। ১২ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য দেন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম। রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে চালানো গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ১১ নভেম্বর জবানবন্দি দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ। তিনি এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীদেরও একজন ছিলেন। ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনিও হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন। এ মামলায় যথাক্রমে ৪ নভেম্বর, ২১ ও ১৩ অক্টোবর সাক্ষী না আনতে পারায় পরপর তিনবার সময় পেছানো হয়।

গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন জবানবন্দি দেন পুলিশের দুই উপপরিদর্শক। তারা হলেন- এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল। গত ২৮ আগস্ট জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। একই দিন সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।

গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম। ২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান।

২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৬২ জন।

পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জুলাই বিপ্লবকে ‘তথাকথিত’ বলে বিচারের আদেশ পুনর্বিবেচনার দাবি ইনুর Nov 27, 2025
img
দক্ষিণের তারকা নাগার্জুনার ঘরে ধর্মীয় বৈচিত্র্যের নতুন গল্প Nov 27, 2025
img
ন্যেদারল্যান্ডসে এবার আবিষ্কার হল প্যারাসিটামলযুক্ত ভ্যানিলা আইসক্রিম Nov 27, 2025
img
শীতের রাতে আগুনে খোলা আকাশের নিচে এক হাজারেরও বেশি পরিবার Nov 27, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের স্বর্ণের দামে পতন Nov 27, 2025
img
লটারির সরকার লটারি করবে এটাই স্বাভাবিক : নিলোফার চৌধুরী মনি Nov 27, 2025
img
প্লট দুর্নীতির মামলায় জয়-পুতুলের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড Nov 27, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে সতর্ক সংকেত Nov 27, 2025
img
হাজারটা ভালো মন্তব্যের ভিড়ে খারাপগুলোকে কেন গুরুত্ব দেব?: রুক্মিণী মৈত্র Nov 27, 2025
img
আজ অনুষ্ঠিত হবে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর স্মরণসভা Nov 27, 2025
img
গৌতম গম্ভীর থাকছেন কি না, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভারতীয় বোর্ডের Nov 27, 2025
img
ওয়াশিংটনে গুলি চালানো সন্দেহভাজন আফগানিস্তান থেকে এসেছেন : ট্রাম্প Nov 27, 2025
img
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার Nov 27, 2025
img
বিয়ে জটিলতায় অমিতাভের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি স্মৃতি Nov 27, 2025
img
‘গুস্তাখ ইশক’ এ পুরোনো দিল্লির প্রেমের কাব্য Nov 27, 2025
img
আরিফিন শুভ ও ঐশী অভিনীত ‘নূর’ এবার মুক্তি পাচ্ছে ওটিটিতে Nov 27, 2025
img
তারকাদের ছবিতে ‘৯’, ‘২৪’, ‘১০০০’: এই সংখ্যার রহস্য কী? Nov 27, 2025
img
‘প্রিন্স’-এ শাকিবের কলকাতার নায়িকাও কি তবে চূড়ান্ত ? Nov 27, 2025
img

প্লট দুর্নীতির ৩ মামলা

শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদন্ড Nov 27, 2025
img
হংকংয়ে আবাসিক কমপ্লেক্সের আগুন ১৮ ঘণ্টা পরও নেভেনি, গ্রেপ্তার ৩ Nov 27, 2025