আবু সাঈদ হত্যা মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ৯ ডিসেম্বর

জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ২১তম সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ৯ ডিসেম্বর।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এ দি ন ধার্য করেন।

এর আগে সোমবার (২৪ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল জানান, জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ১৭তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। তবে বিশেষ কারণে না হওয়ায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এ ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য হলেন- জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ওইদিন এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল। তবে বিশেষ কারণে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।
ওইদিন কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়

তারা হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।

২৩ নভেম্বর ১৬তম দিনের মতো জবানবন্দি দেন সাজু রায়। আবু সাঈদকে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। এছাড়া মৃত ঘোষণার পর পথ থেকে তার লাশটি পুলিশ কেড়ে নিয়েছিল বলে জানান। পরে তাকে জেরা করেন পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স ও গ্রেপ্তারদের আইনজীবীরা।

এর আগে, ১৮ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন শিক্ষার্থী শান-এ রওনক বসুনিয়া। তিনিও বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। গত ১৬ নভেম্বর জবানবন্দি দিয়েছেন মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক। ১৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে তিনি গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের পুরো বর্ণনা তুলে ধরেন। ১৩ নভেম্বর প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে জবানবন্দি দেন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক।

১২ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য দেন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম। রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে চালানো গুলিতে আবু সাঈদ শহীদ হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ১১ নভেম্বর জবানবন্দি দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান আহমেদ। তিনি এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীদেরও একজন ছিলেন। ১০ নভেম্বর সাক্ষ্য দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনিও হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন। এ মামলায় যথাক্রমে ৪ নভেম্বর, ২১ ও ১৩ অক্টোবর সাক্ষী না আনতে পারায় পরপর তিনবার সময় পেছানো হয়।

গত ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ওই দিন জবানবন্দি দেন পুলিশের দুই উপপরিদর্শক। তারা হলেন- এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল। গত ২৮ আগস্ট জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। একই দিন সাংবাদিক মঈনুল হকও সাক্ষ্য দেন।

গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম। ২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান।

২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৬২ জন।

পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিজিবির অভিযানে ৭১০ কোটি টাকার চোরাইপণ্য জব্দ, গ্রেপ্তার ৫২৬ Nov 27, 2025
img
ডেঙ্গুতে একদিনে ৭ জনের মৃত্যু Nov 27, 2025
img
নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশনা দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : ইসি Nov 27, 2025
img
নতুন স্বাধীনতা নিরাপদ রাখতে হবে তরুণদের : মনির হায়দার Nov 27, 2025
img
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প অনুভূত Nov 27, 2025
img
পুনরায় নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এইচএসসি বাংলার সিলেবাস একই থাকবে Nov 27, 2025
img
বিপিএলের নিলামে অংশ নিচ্ছেন ভারতীয় ৩ তারকা Nov 27, 2025
img
প্রধান বিচারপতির বিদায়ী অভিভাষণ ১৪ ডিসেম্বর Nov 27, 2025
img
ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে হৃদয়স্পর্শী বার্তা হেমা মালিনীর Nov 27, 2025
img
৪ গোল করা এমবাপের প্রশংসায় রিয়াল কোচ Nov 27, 2025
img
সৌদি-মালয়েশিয়াসহ ৭ দেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন স্থগিত Nov 27, 2025
img
বিপিএলের নিলামে আইপিএলজয়ী ভারতীয় ক্রিকেটার পীযুষ চাওলা Nov 27, 2025
img
বিপিএলে বিদেশি ক্রিকেটারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ Nov 27, 2025
img
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করলেন ট্রাম্প Nov 27, 2025
img
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. তাহেরকে দেখতে হাসপাতালে মির্জা ফখরুল Nov 27, 2025
img
সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া Nov 27, 2025
img
হোম ফিডের বিশৃঙ্খলা দূর করতে ইউটিউবের নতুন ফিচার ‘কাস্টম ফিড’ Nov 27, 2025
img
সোমবার থেকে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা শিক্ষকদের Nov 27, 2025
img
সমীর ওয়াংখেড়ে বিতর্কে শাহরুখ-গৌরীর তীক্ষ্ণ অবস্থান Nov 27, 2025
img

প্লট জালিয়াতি

হাসিনাসহ ২২ জনের কারাদণ্ড ও জরিমানা Nov 27, 2025