রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি আজ এক অদ্ভুত দ্বিধাবিভক্ত বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে। একদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না বলে নিজেই ফেসবুকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা চলছে। অথচ বাস্তবে সেটিও অনিশ্চিত।
দুই নেতার অবস্থান দুই মেরুতে হলেও তাদের ঘিরে যে রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেখানে একটা মিল স্পষ্ট। বাংলাদেশের ট্রাজিশন রাজনীতিতে এখন আর কারো ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা ঘোষণাই চূড়ান্ত নয়। সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হচ্ছে বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সমীকরণের ভেতর থেকে।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের অসুস্থতা, গত কয়েক দিনের আশঙ্কাজনক শারীরিক অবস্থা, হাসপাতালের বেডের পাশে ছেলের উপস্থিতি নিয়ে জনমনের স্বাভাবিক এবং মানবিক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ১৫ মাস পর, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপিকে নতুন করে সংগঠিত করার এই কঠিন সময়টায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, নেত্রী যখন প্রায় অচল তখন নেতা ছেলে অবশেষে মাঠে ফিরবেন।
জিল্লুর বলেন, দলের ভেতরে বাইরে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমনকি আন্তর্জাতিক মহলেও এই প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা ঘিরে নানা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার ভিড়ে তারেক রহমানের নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাস ঠিক বিপরীত বার্তাই দিল।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, মায়ের স্নেহস্পর্শ পাওয়ার আকুতি তারও আছে। কিন্তু দেশে ফেরা তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এই এক বাক্যে ভেঙে গেল সেই প্রচলিত ব্যাখ্যা। যেখানে সব দায় চাপিয়ে দেওয়া হতো মামলার ওপর, নিরাপত্তা ঝুঁকির ওপর কিংবা আওয়ামী লীগ আমলের কথিত বাধা-বিপত্তির ওপর।
জিল্লুর আরো বলেন, এখন মামলা নেই, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বুলেটপ্রুফ গাড়ি থেকে শুরু করে অস্ত্রের লাইসেন্স আবেদনের তথ্য পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে চলে এসেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার সরাসরি জানিয়েছে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তখনো যদি তিনি ফিরতে না পারেন, তাহলে বুঝতে হবে হিসাবটা ঢাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে।
আরপি/টিকে