শান্তি আলোচনায় ভূখণ্ড ইস্যুকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আখ্যা দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দখলকৃত কোনো এলাকা কিয়েভ ছাড় দেবে না বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি।
এর মধ্যেই রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে নিহত হয়েছেন অন্তত চারজন, আহত আরও বেশ কয়েকজন। এদিকে মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের বৈঠক ঘিরে জেগেছে নতুন শঙ্কা।
পূর্ব ও মধ্য ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে স্থানীয় সময় সোমবার (১ ডিসেম্বর) রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভবন। বিস্ফোরণে উড়ে যায় ভবনের জানালা, ছড়িয়ে পড়ে ধ্বংসাবশেষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিল্প কারখানা, মেরামত কেন্দ্রসহ বহু স্থাপনা। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। আহতদের মধ্যে অনেকে আছেন আশঙ্কাজনক অবস্থায়।
এই হামলার মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তি প্রচেষ্টায় চলছে নতুন তৎপরতা। সোমবার প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। যেখানে তিনি যুক্তরাজ্য, জার্মানি, পোল্যান্ড ও ইতালিসহ ইউরোপীয় নেতাদের সাথে একটি ফোনালাপে যোগ দেন।
বৈঠকের পর ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন শান্তি চুক্তি সম্পর্কে জেলেনস্কি বলেন, ‘শান্তি আলোচনায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভূখণ্ড ইস্যু। দখলকৃত কোনো এলাকাই ছাড় দেবে না কিয়েভ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি যাতে রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে তৃতীয় কোনো আক্রমণ না হয় এবং যুদ্ধের অবসানের চুক্তিতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। রাশিয়া অনেকবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে, তাই নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রয়োজন।’
জেলেনস্কির সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইউরোপীয় নেতারাও বলছেন, সীমান্ত নির্ধারণ করবে ইউক্রেনই। এ নিয়ে বড় কোনো ছাড়ের সুযোগ নেই। এদিকে ওয়াশিংটনও চাইছে যুদ্ধের দ্রুত অবসান। ফ্লোরিডায় মার্কিন ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের বৈঠককে ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বলে মন্তব্য করেছে হোয়াইট হাউস।
এছাড়া মস্কোতে খুব শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্প জামাতা জ্যারেড কুশনার। সেখানে তুলে ধরা হবে যুক্তরাষ্ট্র–ইউরোপের আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি নতুন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার নকশা।
এদিকে রুশ সামরিক অগ্রগতির দাবি তুলে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পোকরোভস্ক ও ভভচানস্ক দখল করা হয়েছে। যদিও এসব দাবি অস্বীকার করছে কিয়েভ। একই সময়ে তুরস্ক সতর্ক করছে, কৃষ্ণ সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। যুদ্ধ এখন সামুদ্রিক নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
কেএন/টিকে