শীতকাল তাপমাত্রা কমে যাওয়া এবং সংক্রমণ বাড়ার একটি সংবেদনশীল সময়। এ সময় উষ্ণ ও আরামদায়ক খাবারের প্রতি আকর্ষণ স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। শীতে প্রতিদিন পেয়ারা খেলে শরীর পায় বিশেষ পুষ্টিগুণ, যা ঠাণ্ডা মৌসুমে সুস্থ থাকতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন সি, ফাইবার ও বিভিন্ন খনিজ সমৃদ্ধ এই ফল প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে, শীতজনিত অস্বস্তি কমাতে এবং শরীরের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে পেয়ারা খাওয়ার প্রধান উপকারিতা—
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পেয়ারা ভিটামিন সি-এর একটি অসাধারণ উৎস। একটি পেয়ারায় কমলার তুলনায় অনেক বেশি ভিটামিন সি থাকে। পাশাপাশি এতে রয়েছে লাইকোপিন ও বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। শীতে ভাইরাল জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে।
নিয়মিত পেয়ারা খেলে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরো দৃঢ় হয়।
কাশি–সর্দি উপশমে কার্যকর
ঠাণ্ডায় সর্দি ও কাশি দৈনন্দিন জীবনকে অস্বস্তিকর করে তোলে। এই সময় পেয়ারা চিকিৎসাধর্মী ফলের মতো কাজ করে। কাঁচা বা আধাপাকা পেয়ারা শ্বাসনালির শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং গলা ও ফুসফুসে জমে থাকা জীবাণু দূর করে।
ফলে কাশি, সর্দি ও ঠাণ্ডাজনিত অ্যালার্জিতে দ্রুত উপশম মেলে।
হজমশক্তি উন্নত করে
শীতে পানি কম খাওয়া ও অলসতা দুটিই হজমের গতি কমিয়ে দেয়। পেয়ারা এতে প্রাকৃতিক সমাধান দিতে পারে। ফাইবারসমৃদ্ধ এই ফল অন্ত্রের গতি ঠিক রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করে, ফলে হজম হয় সহজে এবং পুষ্টি শোষণও বাড়ে।
শীতকালে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ঠাণ্ডায় অনেকেই ক্যালরিযুক্ত খাবার বেশি খেয়ে ফেলেন। পেয়ারা এই বাড়তি খাওয়ার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। এতে ক্যালরি কম হলেও ফাইবার বেশি, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এর প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ রক্তে চিনির মাত্রা না বাড়িয়েই মিষ্টি খাবারের চাহিদা পূরণ করে। তাই ওজন সামলাতে পেয়ারা হতে পারে দারুণ একটি বিকল্প।
হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী
শীতে অনেক সময় নোনতা ও চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়, যা হৃদযন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। পেয়ারায় থাকা পটাশিয়াম সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
এমকে/এসএন