ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর মো. আব্দুল জলিল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এবং ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে কথোপকথনের কিছু অংশ ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি সামনে আসার পর রাজনৈতিক মহল থেকে সোশ্যাল মিডিয়া—সব জায়গায় নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
জনগুরুত্ব বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট আলাপের অংশ বিশেষ প্রকাশ পেয়েছে বলে জানা গেছে, যেখানে ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য নির্বাচনি দায়িত্ব, কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ডিউটি প্ল্যান নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে।
ভিডিও ফাঁসের দাবির পরই আবারও সামনে এসেছে ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য যোগাযোগ নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্ক।
যদিও গত ২৮ অক্টোবর এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্পষ্টভাবে বলেন—‘ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের কোনও সাংগঠনিক বা প্রশাসনিক সম্পর্ক নেই।’
তবে নতুন করে কথোপকথন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি এখন জনমনে প্রশ্ন তুলেছে।
এর আগে ২৬ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামী উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব না দেওয়ার আহ্বানের পর এমন প্রতিক্রিয়া জানায় জামায়াত।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছিলেন—‘বিএনপির দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে অরাজনৈতিক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাই তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
তার ভাষায়—‘এ ধরনের অভিযোগ নির্বাচনকে ঘিরে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।’
গত ২৩ অক্টোবর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে অভিযোগ তোলে যে—‘ব্যাংকগুলোর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাজনৈতিক পক্ষপাত থাকতে পারে, তাই তাদের ভোটের কাজে না রাখা উচিত।’
বৈঠক শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন—‘নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে।’
কে এই মো. আব্দুল জলিল?
ফাঁস হওয়া কথোপকথনের সঙ্গে যার নাম জড়িয়েছে—তিনি ইসলামী ব্যাংকের ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর মো. আব্দুল জলিল। যিনি দেশের অভিজ্ঞ ও খ্যাতিমান ইসলামী ব্যাংকারদের একজন।
আব্দুল জলিল ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন, ১৯৮৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে ২০১৭ সালে অবসর নেন।
ব্যাংকিং, বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, অফশোর ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার দক্ষতার কথা উল্লেখ রয়েছে ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল প্রোফাইলে।
এবি/টিকে