রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতি যেন নিঃশ্বাস আটকে রাখা এক অস্বস্তিকর অপেক্ষার মধ্যে আছে। রাষ্ট্রযন্ত্র, রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, মিডিয়া সবাই একই প্রশ্ন স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে মাত্র একটি দিকে। বেগম খালেদা জিয়া কেমন আছেন?
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে জিল্লুর এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, একজন অসুস্থ মানুষকে ঘিরে কেন পুরো দেশের মনোযোগ এমনভাবে কেন্দ্রীভূত হয়ে গেল? এই প্রশ্নটাই আমাদের সময়ের একটি গভীর রাজনৈতিক বাস্তবতাকে উন্মোচিত করে।
খালেদা জিয়া কেবল একজন প্রবীণ নেত্রী নন। গত এক বছরের বিশেষত ৫ আগস্টের নাটকীয় রাজনৈতিক ধাক্কার পর তিনি হয়ে উঠেছেন সর্বজনগ্রাহ্য রাজনীতির প্রতীক।
তিনি বলেন, বিভক্ত সমাজে যেখানে বিশ্বাসের ঘাটতি প্রকট সেখানে তার ব্যক্তিত্ব অনেক রাজনীতিকের ওপর আরোপিত পক্ষপাতদুষ্ট ধারণার ঊর্ধে উঠে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনীতির যে নতুন মানচিত্র তৈরি হয়েছে তাতে প্রকৃতপক্ষে কোনো সর্বজন স্বীকৃত অভিভাবকের শূন্যতা তৈরি হয়েছিল।
আর সেই শূন্যতাই অনেকের চোখে অনিচ্ছাকৃতভাবেই পূরণ করেছেন খালেদা জিয়া এবং তার উপস্থিতি। এই কারণে তার অসুস্থতা নিছক পারিবারিক বা দলীয় উদ্বেগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি রাষ্ট্রীয় উদ্বেগে পরিণত হয়েছে।
জিল্লুর বলেন, নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দেশটিতে রাজনৈতিক পরিবেশ এমনিতেই টানটান।
মাঠে সহিংসতার মাত্রা কম থাকলেও ভেতরে ভেতরে রয়েছে অনিশ্চয়তার চাপ। এই সময় খালেদা জিয়ার অসুস্থতা যেন পুরো প্রক্রিয়াটাকেই আরো ভঙুর করে তুলেছে।
জিল্লুর আরো বলেন, বিএনপির প্রার্থী বাছাই, আসন সমঝোতা, প্রচারণার গতি সবকিছুতেই এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র সব স্তরে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যে বিচলিত দুর্বলতা চোখে পড়ছে তা সরাসরি যুক্ত হয়েছে তার শারীরিক অবস্থার সঙ্গে। এটা কেবল বিএনপির ক্ষেত্রেই নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও বুঝতে পারছে বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও স্থিতিশীল করতে একটি নৈতিক ও মানসিক ভারসাম্য প্রয়োজন।
যার গুরুত্ব দলীয় সীমার বাইরে বিস্তৃত। খালেদা জিয়া সেই ভারসাম্যের অন্যতম ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
ইএ/এসএন