সবচেয়ে বড় পরিসরে আগামী জুন-জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় ২০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৮ দলের ড্র সম্পন্ন হয়েছে, গ্রুপপর্বে কে কার প্রতিপক্ষ তা এখন প্রকাশ্যে। যদিও এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে ৪২টি দল, প্লে-অফ থেকে আরও ৬ দল মেগা টুর্নামেন্টটির টিকিট পাবে। তার আগে ড্রতে ফিরে এসেছে তিন বিশ্বকাপের স্মৃতি। বড় চমক পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের গ্রুপে।
ইউরোপীয় দেশ স্কটল্যান্ড ২০২৬ আসর দিয়ে বিশ্বকাপে প্রত্যাবর্তন করছে ২৮ বছর পর। কাকতালীয়ভাবে তাদের খেলা সর্বশেষ ১৯৯৮ আসরে গ্রুপপর্বের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ব্রাজিল ও মরক্কো। স্কটিশরা এবারও ‘সি’ গ্রুপে তাদেরকে পেয়েছে। ওই গ্রুপের আরেক দল আফ্রিকান দেশ হাইতি। ‘সি’ গ্রুপে নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টেরেই অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিলকে মোকাবিলা করতে হবে। আর মরক্কো ছিল ২০২২ বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় চমক। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে খেলা আশরাফ হাকিমির দলটি এবারও দারুণ ফর্মে আছে।
ব্রাজিল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে মরক্কোর সঙ্গে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপেও দুই দলের গ্রুপে দেখা হয়েছিল, ৩-০ গোলে জিতেছিল সেলেসাওরা। একই আসরে ব্রাজিল ২-১ ব্যবধানে হারায় স্কটল্যান্ডকে। আবার, মরক্কো ও স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি দেখায় ৩-০ গোলে জিতেছিল আফ্রিকান দেশটি। সবমিলিয়ে স্কটিশদের জন্য ওই আসরটি ছিল হতাশাজনক। আর ব্রাজিল পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেও স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে ফাইনালে একপেশে ম্যাচ হারে। শিরোপানির্ধারণী ম্যাচে তাদের ম্লান পারফরম্যান্সও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল।
এদিকে, গ্রুপপর্বে অতীতে মুখোমুখি দেখা হওয়ার নজির ছিল এমন আরও দুটি ঘটনা দেখা যাবে ২০২৬ বিশ্বকাপে। ২০১৮ আসরের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স পড়েছে ‘আই’ গ্রুপে। যেখানে তাদের সঙ্গী সেনেগাল, নরওয়ে এবং ইরাক/বলিভিয়া/সুরিনামের মধ্যকার প্লে-অফে বিজয়ী দল। এর আগে ২০০২ বিশ্বকাপেও একই গ্রুপে পড়েছিল ফ্রান্স-সেনেগাল। যেখানে আফ্রিকান সিংহখখ্যাত সেনেগালিজদের ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল ফরাসিরা। এ ছাড়া ‘আই’ গ্রুপে ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে ও নরওয়ের আর্লিং হালান্ডের দ্বৈরথ নিয়েও বেশ রোমাঞ্চ ছড়াচ্ছে।
ফিফার আসন্ন মেগা টুর্নামেন্টে সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ ‘এল’কে বলা হচ্ছে ‘গ্রুপ অব ডেথ’। যেখানে ইংল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, ঘানা ও পানামা পরস্পরের মোকাবিলা করবে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও গ্রুপপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-পানামা। যেখানে হ্যারি কেইনদের কাছে ৬-১ ব্যবধানে উড়ে গিয়েছিল পানামা। তবে এবার আফ্রিকান দেশটির শক্তিমত্তা বেড়েছে। ২০২৩ কনকাকাফ গোল্ড কাপ টুর্নামেন্টে রানার্সআপ হয়েছিল পানামা। ফলে এবার ইংলিশদের সঙ্গে তাদের লড়াইটা জমতে পারে। এ ছাড়া গ্রুপের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া-ঘানাও বেশ শক্তিশালী।
প্রসঙ্গত, আগামী ১১ জুন থেকে প্রথমবার ৪৮ দলের অংশগ্রহণে শুরু হবে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬টি ভেন্যুতে হবে ১০৪টি ম্যাচ। অথচ আগের আসরেও বিশ্বকাপের ম্যাচসংখ্যা ছিল ৬৪টি। গ্রুপপর্ব থেকে শীর্ষ দুটি দল (৩২) যাবে রাউন্ড অব ৩৬–এ। বাকি ৮টি স্লট পূর্ণ হবে গ্রুপপর্বের লড়াইয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা সেরা ৮টি দল নিয়ে। এরপর ক্রমান্বয়ে রাউন্ড অব সিক্সটিন, ৮ দলের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এবং ১৯ জুলাই ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
এবি/টিকে