বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করতে আগ্রহী দুই দেশ। একইসঙ্গে উভয়ই দেশ আলোচনার মধ্যমে যুব উন্নয়ন, সৃজনশীল খাত এবং তথ্য বিনিময়সহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতেও দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
সম্প্রতি মালদ্বীপের যুব ক্ষমতায়ন, তথ্য ও শিল্পকলা মন্ত্রী ইব্রাহিম ওয়াহিদের সঙ্গে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলামের সৌজন্যে সাক্ষাতে এই ঐকমত্য পোষণ করেন।
এসময় উভয় পক্ষই ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে যুবকেন্দ্রিক সহযোগিতা জোরদারের ব্যাপারে দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। একইসাথে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান স্বীকার করে ভবিষ্যতে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি বৈঠকটি মালদ্বীপের যুব ক্ষমতায়ন, তথ্য ও শিল্পকলা মন্ত্রণালয়ে অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে হাইকমিশনারের পারসোনাল অফিসার মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন।
বৈঠকে মন্ত্রী ইব্রাহিম ওয়াহিদ মালদ্বীপের বর্তমান যুব সমাজের চিত্র তুলে ধরে বলেন, মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশই যুবসমাজ। প্রতি বছর মাত্র ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেলেও বিপুল সংখ্যক যুবকের জন্য সুযোগ সীমিত। যার জন্য তার মন্ত্রণালয়ে যুবকদের জন্য উচ্চশিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি সম্প্রসারণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
এছাড়াও মন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের ও পেশাজীবীদের বিশাল অবদানের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে দেশটির উন্নয়নের বহু খাতে বাংলাদেশিদের পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে যোগ করেন তিনি।
বৈঠকে হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম যুবসমাজকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করেন। এছাড়া দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বেশ কিছু ফলপ্রসূ কর্মসূচি আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
যার মধ্যে যুব ও তরুণ শিল্পীদের নিয়ে শিল্পকলা প্রদর্শনী, যৌথ চলচ্চিত্র উৎসব ও সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম তৈরি, মিডিয়া তথ্য ও ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিময় কর্মসূচি, যুব উন্নয়ন ও তথ্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) প্রণয়ন করা।
এছাড়াও হাইকমিশনার সম্প্রতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুবসমাজের অগ্রণী ভূমিকার কথাও গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন এবং শান্তি, গণতন্ত্র ও ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনে যুবকের ভূমিকা বৈশ্বিক অনুপ্রেরণা হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন।
বৈঠকের শেষপর্যায়ে উভয়ে যুব উন্নয়ন, সংস্কৃতি, তথ্য বিনিময় ও সংশ্লিষ্ট নানা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। আর এই প্রস্তাবের আগ্রহ প্রকাশ করে পরবর্তী আলোচনার ভিত্তিতে স্মারক প্রণয়নে এগিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন মালদ্বীপের যুব ক্ষমতায়ন, তথ্য ও শিল্পকলা মন্ত্রী ইব্রাহিম ওয়াহিদ।
এসএস/টিকে