‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে নতুন জোট ঘোষণা করলেন নাহিদ ইসলাম

জুলাই অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার রক্ষা ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বিনির্মাণে তিনটি রাজনৈতিক দলের ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ নামে নতুন জোট ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নতুন জোট ঘোষণা করেন।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নতুন এ জোট ঘোষণা করেন। নতুন জোটের রাজনৈতিক দলগুলো হলো- জাতীয় নাগরিক পার্টি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও এবি পার্টি।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম সাইফ মোস্তাফিজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে নতুন জোটের মুখপাত্র হিসেবে ঘোষণা করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

নাহিদ ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা একটা ঐক্য প্রক্রিয়ার ভেতরে ছিলাম। আমরা চেষ্টা করছিলাম যে, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশে তৈরি হয়েছিল, গত প্রায় দেড় বছরে আমরা কিন্তু তার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আমাদের সেক্ষেত্রে অনেক জায়গায় হতাশা রয়েছে। আমরা দেখেছি, ঐক্যমত কমিশনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বিভিন্ন শক্তি সংস্কারের বিরোধিতা করেছে। বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা যারা সংস্কারের পক্ষে, পরিবর্তনের পক্ষে এবং গণঅভ্যুত্থানকে সফল করার জন্য তার আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সফল করার জন্যই আন্তরিকভাবে কাজ করে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা যারা আন্তরিকভাবে চাই, আমরা সেই রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের এই ঐক্য প্রক্রিয়া আজকে শুরু হয়েছে এবং এটা চলমান থাকবে। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান করছি, বার্তা দিচ্ছি, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো আমরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। আমরা বাংলাদেশকে পুরাতন রাজনীতির পথে আর ফেরত যেতে দেব না।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশ এবং আগের বাংলাদেশ এক হবে না। আমরা নানা আলামত দেখছি যে, বাংলাদেশ হয়তো আগের মতো হয়ে যাবে। আমরা সেই ধরনের হতাশা এবং ভীতি মানুষের ভেতরে দেখতে পাচ্ছি। আমরা সেই সাহসটা জানাতেই আজকে এসেছি।

আমরা আমাদের শক্তি সামর্থ্য দিয়ে বাংলাদেশের যে পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হয়েছে সেই যাত্রার পথে থাকবো। যারা অন্যান্য রাজনৈতিক দল রয়েছেন, যারা এই পরিবর্তনের পক্ষে কাজ করতে চায়। আমরা তাদেরকে আহ্বান জানাবো, এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে। এই ঐক্য প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। আমরা তিনটি রাজনৈতিক সংগঠন সংস্কারকে সামনে রেখে বাংলাদেশের জাতীয় মর্যাদা এবং অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নকে সামনে রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের এই যৌথ প্রক্রিয়া বা এই প্রক্রিয়াকে আমরা নাম দিয়েছি গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট। আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট বলছি, কারণে এই যে বাংলাদেশের বিগত ১৬ বছর এই লড়াইটা কিন্তু হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, সংস্কারের আলাপগুলো ছিল। ফলে নির্বাচন কেবল ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য হবে না। এই নির্বাচনকে আমরা রাজনৈতিক নির্বাচনে পরিণত করতে চাই। দেশ বদলের জন্য সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য এবং আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির যাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই এবং আমরা সেটা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করব নির্বাচনে।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আপাতত বিদেশে নেওয়া হচ্ছে না বেগম খালেদা জিয়াকে Dec 08, 2025
img
মোস্তাফিজের জোড়া উইকেটে সহজ জয় ক্যাপিটালসের Dec 08, 2025
img
অবৈধ ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএসসিসি Dec 08, 2025
img
প্রয়োজনে ৩০০ ভোট পাব কিন্তু চাঁদাবাজের কাছে মাথা নত করব না : হাসনাত আব্দুল্লাহ Dec 08, 2025
img
হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা পুলিশ হেফাজতে প্রাণ হারালেন Dec 08, 2025
img
এবার হায়দরাবাদে ‘বাবরি মসজিদ স্মারক’ নির্মাণের পথে মুসলিম সংগঠন! Dec 08, 2025
img
ভারত থেকে এলো ৬০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ Dec 07, 2025
img
আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব: সাকিব Dec 07, 2025
মক্কায় বয়স্কদের তাওয়াফে যে সুবিধা! Dec 07, 2025
img
বিপিএল মাতাতে আসছেন রমিজ রাজা ও ওয়াকার ইউনুস Dec 07, 2025
img
এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার Dec 07, 2025
img
‘ধুরন্ধর’ ছবির সঙ্গে কোথায় ‘উরি'র মিল পাচ্ছেন দর্শকরা? Dec 07, 2025
img
অনলাইনে ঝড় তুলল অক্ষয়ের 'কেসরি চ্যাপ্টার ২' Dec 07, 2025
img
চা ফ্যাক্টরি থেকে ওয়্যারহাউজে যাওয়ার পথে চায়ের গাড়িকে ভূতে ধরে, হাওয়া হয়ে যায়: চা বোর্ডের চেয়ারম্যান Dec 07, 2025
img
এবার আরিয়ান বিতর্কে মুখ খুললেন কর্নাটকের মন্ত্রীর ছেলে Dec 07, 2025
img
ছোট্ট আরাধ্যাও হয়ে উঠেছিল কানের তারকা! Dec 07, 2025
img
প্রাথমিকের ৩২ হাজার শিক্ষকের পদোন্নতির বিষয়ে মুখ খুললেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা Dec 07, 2025
img
বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে থাই রাষ্ট্রদূতের বৈঠক Dec 07, 2025
img
প্রথম ছবির পরেই তিরিশ হাজার বিয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন হৃতিক Dec 07, 2025
img
আরএমপির ১২ থানার ওসিকে বদলি Dec 07, 2025