২০২৩ সালে লিওনেল মেসি যখন ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন দলটি ছিল এমএলএসের তলানির দল। দুই বছরের মাথায় মেসির অবিশ্বাস্য যাত্রা দেখল পরিণতি। বিশ্বজয়ী মহাতারকা জয় করলেন উত্তর আমেরিকা। গত রাতে (৬ ডিসেম্বর) এমএলএস কাপের ফাইনালে ভ্যাঙ্কুবার হোয়াইটক্যাপসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ইন্টার মায়ামি তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপ জিতেছে। গোল না করলেও সতীর্থদের দুটি গোল বানিয়ে দিয়ে এই জয়ের নায়ক মেসিই।
ইন্টার মায়ামিকে এই নিয়ে তৃতীয় শিরোপা এনে দিলেন মেসি। ২০২৩ সালে প্রথম শিরোপা হিসেবে জিতিয়েছিলেন লিগস কাপ, যেটি ছিল ক্লাবটির ইতিহাসের প্রথম শিরোপা। এরপর গত বছর হেরনদের এনে দিয়েছেন সাপোর্টারস শিল্ড। এবার এমএলএস কাপ জেতানোর পর মেসি সার্জিও বুস্কেটস, জর্দি আলবা এবং ইন্টার মায়ামি পরিবারের সবার উদ্দেশে আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন।
এমএলএস কাপে এবার দ্বিতীয়বারের মতো প্লে-অফে উঠেছিল মায়ামি, আর একই সঙ্গে ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম লিগ শিরোপা। ২০২৪ সালে আটলান্টা ইউনাইটেডের কাছে হতাশাজনক বিদায়ের ঠিক এক বছর পর দ্বিতীয় চেষ্টায় সফলতা পেল হেরনরা। এবারের ফাইনালটি ছিল স্প্যানিশ দুই তারকা জর্দি আলবা এবং সার্জিও বুস্কেটসের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচও। ইন্টার মায়ামির ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা করে নিয়ে সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন।
শিরোপা উদযাপনের পর মেসি ইনস্টাগ্রামে তার মায়ামি অধ্যায় নিয়ে লিখেছেন, 'আমরাই এমএলএস চ্যাম্পিয়ন!!! মায়ামিতে আসার পর থেকেই এই দিনের স্বপ্ন দেখতাম। অল্প অল্প করে আমরা এগিয়ে গেছি, উন্নতি করেছি, বিশেষ কিছু গড়েছি, যা আমাদের এই শিরোপায় এনে দাঁড় করিয়েছে।আমার পরিবার, ভক্ত, পুরো দল, স্টাফ এবং ইন্টার মায়ামি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ, তাদের কঠোর পরিশ্রম ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য।'
ম্যাচ ও উদযাপনের মুহূর্ত নিয়ে পোস্ট করা ছবিগুলোতে মেসি তার দুই প্রিয় সাবেক বার্সা সতীর্থকেও আবেগী বিদায় জানান।
তিনি লিখেছেন, 'ধন্যবাদ বুসি এবং জর্দি, আমার সঙ্গে এই অভিযানে যোগ দেওয়ার জন্য এবং এটি সেরা ভাবে শেষ করার জন্য। তোমাদের সঙ্গে এই সাফল্য ভাগ করে নিতে পেরে আমি খুবই খুশি।'
আলবা তার ইন্টার মায়ামি ক্যারিয়ার শেষ করছেন ১০৩ ম্যাচে ১৫ গোল এবং ৩৩ অ্যাসিস্ট নিয়ে। অন্যদিকে বুস্কেটস শেষ করছেন ১১৬ ম্যাচে ১ গোল এবং ১৬ অ্যাসিস্টসহ। দুজনই হেরনদের হয়ে ১০০ ম্যাচ খেলা বিরল তালিকায় নিজের নাম তুলেছেন। নেতা ও বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে তাদের উপস্থিতি সহজে পূরণ করা যাবে না। তবে এখন তারা নতুন জীবনের অধ্যায়ে যাওয়ার আগে এই সাফল্য উপভোগ করবেন।
এদিন মেসি, ডি পল এবং বুস্কেটস ইতিহাস গড়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এমএলএস কাপ এবং ফিফা বিশ্বকাপ, দুটি ট্রফিই জয়ের কীর্তি গড়েছেন।
ভ্যানকুভার জিতলে টমাস মুলার এই ক্লাবে একমাত্র সদস্য হতেন। কিন্তু ইন্টার মায়ামির জয়ে এই ত্রয়ী এখন সেই অনন্য ক্লাবের সদস্য, যারা এমএলএসের সর্বোচ্চ শিরোপা এবং ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মান বিশ্বকাপ, দু’টোই নিজেদের করে নিতে পেরেছেন।
এমআর/টিকে