রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের রাজনৈতিক অঙ্গনের স্বেচ্ছাচারিতা এখন আর কারো অজানা নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত হোক বা বেসরকারি, ব্যাংকগুলোকে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর জন্য এক ধরনের নরম লক্ষ্য বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। ঋণখেলাপি, টাকা পাচার, ভুয়া সুপারিশে অযোগ্যদের ঋণ মঞ্জুর, মূলধন ঘাটতি লুকানো এসব ছিল দৈনন্দিন খবর।
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিওতে জিল্লুর এসব কথা বলেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময় কোনো সরকারই এই বিপর্যয়কে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার বলে মনে করেনি। ফলে শাস্তি তো দূরের কথা, ব্যাংকিং আইনে বা নিয়ন্ত্রণব্যবস্থায় কোনো অর্থবহ সংস্কারই হয়নি। অপরাধ কার্যত প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অভ্যুত্থানের পরে নতুন সরকার এসে অন্তত একটা বার্তা দিয়েছে ব্যাংক খাতে লাগামহীনতা আর আগের মতো সহজে চলবে না।
জিল্লুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক কোম্পানি আইনে কয়েক ডজন সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবগুলো যদি কার্যকর হয় রাষ্ট্রায়ত্ত বেসরকারি সব ব্যাংক একই নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর আওতায় আসবে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হবে। রাজনৈতিক পদে থাকা ব্যক্তি ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে বসতে পারবেন না।
একটা গ্রুপের এক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি হলে আরেক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পাওয়া কঠিন হবে। পরিচালকের টানা মেয়াদ কমবে। এই সব কয়টি কাগজে-কলমে সুশাসনের দিকে এগোনোর সংকেত।
জিল্লুর আরো বলেন, এই উদ্যোগগুলো কি সত্যি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পরিবেশে বাস্তবায়িত হবে? নাকি শুধু আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দেওয়ার জন্যই সাজানো হচ্ছে? প্রশ্নটা সহজ এবং জটিল দুই-ই । এখানেই এসে দাঁড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন এবং নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাকে ব্যবসার খেলোয়াড় বানিয়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পৃষ্ঠ।
এমকে/টিকে