ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-কে (সাবেক টুইটার) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রকরা যে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে, তাকে ‘একটি জঘন্য সিদ্ধান্ত’ বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, ‘ইউরোপ কিছুটা ভুল পথে হাঁটছে। আমি বুঝতে পারছি না তারা এটা কীভাবে করতে পারে।’ তবে তিনি নিশ্চিত করেন, মাস্ক এ বিষয়ে তার কাছে কোনো সাহায্য চাননি।
ট্রাম্প আরও জানান, জরিমানার বিষয়ে তিনি পুরো প্রতিবেদন নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাবেন এবং সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ইউরোপকে খুব সাবধানে থাকতে হবে।’
গত সপ্তাহে অনলাইন কনটেন্ট সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে ইইউ নিয়ন্ত্রকরা এক্স-কে ১২০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করে।
জরিমানার খবর প্রকাশের পরই ইলন মাস্ক তার প্ল্যাটফর্মে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ইউরোপীয় কমিশনের পোস্টের নিচে তিনি লেখেন, ‘Bullshit’ (নিতান্তই বাজে কথা)। একই সঙ্গে ‘বাকস্বাধীনতাকে গণতন্ত্রের ভিত্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে মাস্ক লেখেন: ‘আপনি কার জন্য ভোট দিচ্ছেন, তা জানার একমাত্র উপায় এটাই।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চেয়ারম্যান ব্রেন্ডান কার-সহ উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তারাও ইইউর এই পদক্ষেপকে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর ওপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন।
ইইউ নিয়ন্ত্রকদের দাবি, এক্স স্বচ্ছতার বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। গবেষকদের জন্য পাবলিক ডেটা অ্যাক্সেস না দেয়া, বিজ্ঞাপন ভান্ডার অসম্পূর্ণ রাখা এবং নীল টিক যাচাইকরণ ব্যবস্থায় বিভ্রান্তিকর ডিজাইন ব্যবহার করার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে।
তবে ইইউর প্রযুক্তি প্রধান হেন্না ভির্কুনেন এই জরিমানার পক্ষে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই জরিমানার পরিমাণ আনুপাতিক এবং ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট (ডিএসএ)-এর সঙ্গে ‘সেন্সরশিপের কোনো সম্পর্ক নেই।’
ইউরোপীয় কমিশনের মতে, এই আইন কোনো নির্দিষ্ট জাতীয়তাকে লক্ষ্য করে নয়; বরং ডিজিটাল ও গণতান্ত্রিক মানদণ্ড রক্ষা করাই এর উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে একই ধরনের অভিযোগে টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও, বিজ্ঞাপন লাইব্রেরি উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় তারা জরিমানা এড়াতে সক্ষম হয়েছে।
পিএ/টিএ