আমাদের দেশের পুকুর ও জলাশয় পাঙ্গাস মাছ চাষের ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী। ১৯৯০ সালে চাঁদপুরে কৃত্রিম প্রজননে সর্ব প্রথম থাই বা সূচী পাঙ্গাসের উৎপাদন এবং পরবর্তীতে পুকুরে চাষ শুরু হয়। এরপর মৎস্য অধিদপ্তরসহ বেসরকারী উদ্যোগে পাঙ্গাস মাছের চাষ পদ্ধতি সারাদেশে ব্যাপক প্রসার লাভ করে। যা দেশের প্রাণীজ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে।
পাঙ্গাস মাছের জাতগুলোর মধ্যে দেশী ও থাই পাঙ্গাস সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। দেশী পাঙ্গাসের রূপালী রঙের পিঠের দিকে কালচে এবং পার্শ্ব রেখার ওপরে সামান্য ধূসর। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীতে এ মাছটি বেশি পাওয়া যায়। আর থাই পাঙ্গাসের আদিবাস থাইল্যান্ডে, কম্পুচিয়া, ভিয়েতনাম এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের দেশে। দেশী পাঙ্গাসের চেয়ে এ জাত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
পাঙ্গাস চাষের জন্য পুকুরের স্থান নির্বাচন
পুকুর প্রস্তুতি
পোনা সংগ্রহ ও পরিবহন
পুকুরের প্রস্তুতি শেষ হলে উন্নত গুনাগুণ সম্পন্ন পাঙ্গাস মাছের পোনা সংগ্রহ করতে হয়। এজন্য বিশ্বস্ত কোনো হ্যাচারি থেকে পোনা সংগ্রহ করা উচিত। পোনা পরিবহনের সময় বিশেষ সতর্কতা নিতে হবে, যাতে করে পরিবহনের সময় পোনার কোনো ক্ষতি না হয়।
খাদ্য প্রয়োগ
পাঙ্গাস চাষে পুকুরে যে প্রাকৃতিক খাবার তৈরি হয়, তা মাছের আশানুরূপ ফলনের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই সুষম খাদ্য প্রয়োগ অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, চাষ পর্যায়ে দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ না করতে পারলে পাঙ্গাসের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। মাছের খাদ্যের পরিমাণ মাছের বয়স এবং দেহের ওজনের ওপর নির্ভর করে।
মাছ সংগ্রহ
বাজারের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে মাছ মজুদের ৫-৬ মাস পর যখন পাঙ্গাসের গড় ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম হয়, তখনই মজুদকৃত মাছের ৫০% বাজারে বিক্রি করে দিতে হয়। এতে করে অবশিষ্ট মাছ দ্রুত বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়।
মনে রাখতে হবে, পরিকল্পিতভাবে পাঙ্গাস মাছের চাষ করলে দেশের সামগ্রিক মৎস্য উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে করে প্রায় হারিয়ে যাওয়া আমাদের ঐতিহ্য ’মাছে ভাতে বাঙ্গালী’-কে পুনরুদ্ধার করতে পাঙ্গাস মাছ চাষ একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
টাইমস/জিএস