ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত আরও স্পষ্টভাবে দিল যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি) ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, মাদুরোর “চলে যাওয়া দরকার”, যা কারাকাসে নেতৃত্ব পরিবর্তনের লক্ষ্যে ওয়াশিংটনের অবস্থানকে আরও পরিষ্কার করে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নোয়েম বলেন, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্ত নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেলবাহী জাহাজ আটকানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র শুধু জাহাজ থামাচ্ছে না, বরং বিশ্বকে একটি বার্তাও দিচ্ছে। তাঁর ভাষায়, “মাদুরো যে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত, তা মেনে নেওয়া যায় না। তার ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়া প্রয়োজন।”
চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী “নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেলবাহী জাহাজের” ওপর অবরোধ ঘোষণা করেন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দুইটি জাহাজ জব্দ করেছে এবং আরেকটির পিছু নিয়েছে।
এ বছর মাদুরোর ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্র তাঁর বিরুদ্ধে তথাকথিত “কার্টেল অব দ্য সানস”-এর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনেছে, যাকে তারা “নার্কো-সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে মাদুরোকে গ্রেপ্তারে সহায়তাকারী তথ্যের জন্য ৫ কোটি ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্র বিপুল সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরীও রয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেনেজুয়েলার উপকূল বরাবর বারবার মার্কিন সামরিক বিমান উড়তে দেখা গেছে।
মার্কিন বাহিনী ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদক পাচারকারী নৌযান লক্ষ্য করে একাধিক হামলাও চালিয়েছে। এসব অভিযানে প্রায় ৩০টি নৌযান ধ্বংস হয়েছে এবং অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এখনো নিশ্চিত প্রমাণ দিতে পারেনি যে এসব নৌযানে সত্যিই মাদক বহন করা হচ্ছিল। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব অভিযানের উদ্দেশ্য মাদক পাচার দমন। কিন্তু হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক মন্তব্যে বলেন, এই হামলাগুলোর মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ সৃষ্টি করা। তাঁর ভাষায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট “মাদুরো আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত নৌযান উড়িয়ে যেতে চান।”
ইউটি